প্রক্টর আনোয়ারকে বাঁচাতে মরিয়া প্রশাসন : ছাত্রলীগ

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০১৬, ১৮:১৩

সাহস ডেস্ক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘সহকারী প্রক্টর খুনি আনোয়ার চৌধুরীকে বাঁচানোর জন্য নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমাদের দাবির মুখে আনোয়ারকে সহকারী প্রক্টর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও প্রশাসন আগের তারিখে আনোয়ারকে দিয়ে অব্যাহতিপত্র লিখিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করছে যে, নিজেই এই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছে আনোয়ার। সহকারী প্রক্টরের অব্যাহতির বিষয়টি নিয়েও লুকোচুরি করছে প্রশাসন।’   
 
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নাজিম উদ্দিন।    

তিনি দাবি করে বলেন, ‘যদি আমাদের দাবির মুখে তাকে অব্যাহতি দেওয়া না হতো তা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজে এসে আমাকে চিঠিটা দিতো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি খুনি আনোয়ারকে কোন প্রকার বাঁচানোর চেষ্টা করে তাহলে কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলা হবে প্রশাসন এর বিরুদ্ধে।’     

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী সংবাদিকদের বলেন, ‘কারও চাপে বা আন্দোলনের ফলে নয়, তদন্তের স্বার্থে সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী নিজে থেকেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইলে, অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে।’    

উপাচার্য আরও বলেন, ‘অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষক প্রথমে আমার কাছে মৌখিকভাবে অব্যাহতি চেয়েছিল। পরে গত রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বরাবর অব্যাহতিপত্র জমা দেয় আনোয়ার। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অব্যাহতি চান তিনি’। প্রক্টর বিষয়টি জানায় আমাকে। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার (২৮ নভেম্বর) সুষ্ঠু তদন্ত হওয়ার স্বার্থে তাকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিই আমি।’    

দিয়াজ হত্যার তদন্তের দায়িত্ব ‘সিআইডি’র কাছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নয়, তাহলে সহকারী প্রক্টর কিভাবে তদন্ত কাজ প্রভাবিত করবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘দায়িত্বে থাকলে বিভিন্ন কাগজপত্র উল্টা-পাল্টা করতে পারে আনোয়ার।’ তবে বিষয়টি নিয়ে আর কোনো কথা বলেননি উপাচার্য। 

ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘দিয়াজের মৃত্যুর ঘটনাটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয় এর বাহিরের এলাকায়। তারপরও আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যা যা সহযোগিতা করা দরকার তা করেছি। যেহেতু বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন তাই তার মৃত্যু নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না আমি।’   

প্রসঙ্গত, গত রবিবার (২০ নভেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেট এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।  

পরে বুধবার (২৩ নভেম্বর) ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মহত্যার ফলে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দিয়াজের। কিন্তু দিয়াজের পরিবার এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে। তারা দাবি করে টেন্ডারসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দিয়াজকে।    

পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। 

শনিবার (২৬ নভেম্বর) সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও চাকরিচ্যুতসহ পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘটের ডাক দেয় ‘সচেতন ছাত্র-ছাত্রীর’ ব্যানারে দিয়াজের অনুসারীরা। পরে অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত