তথ্যপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবন লক্ষ্যে ৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের-এটুআই সমঝোতা

প্রকাশ : ০১ জুন ২০১৭, ১৯:১১

জনগণের দোরগোড়ায় সহজে সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং সেবা পদ্ধতি সহজীকরণ নিয়ে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং দেশের ৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

এ লক্ষ্যে ১ জুন, ২০১৭ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের আয়োজনে কার্যালয়স্থ এসএসএফ ব্রিফিং রুমে এই ৭ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এটুআই প্রোগ্রামের পৃথকভাবে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) এবং এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার। 

এটুআই-এর পক্ষে প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-এর পক্ষে প্রফেসর ড. এ এম এম সফিউল্লাহ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি-এর পক্ষে প্রফেসর আনসার আহমেদ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-এর পক্ষে প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এর পক্ষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি- এর পক্ষে প্রফেসর ড. আতিকুল ইসলাম, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-এর পক্ষে প্রফেসর ড. এম রেজওয়ান খান, এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-এর পক্ষে প্রফেসর এইচ এম জহিরুল হক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

এ সমঝোতা চুক্তির আওতায় ৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রাম যৌথভাবে গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং কৌশল নির্ধারণ করবে যা সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও অধিদপ্তরের সেবাসমূহ জনগণের কাছে সহজে ও দ্রুত পৌছে দিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানের প্রায়োগিকভাবে ব্যবহার ও সম্প্রসারণ, গবেষণার মাধ্যমে সামাজিক সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী প্রকল্প ধারণা তৈরি এবং তা বাস্তবায়নে তাদের অংশগ্রহণ ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে এটুআই এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যৌথভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এটুআই প্রোগ্রামের অর্জনসমূহ এবং নাগরিক সেবায় উদ্ভাবন তাদের একাডেমিক কোর্সে অর্ন্তভূক্ত করবে। যা তাত্ত্বিক জ্ঞানের সাথে ব্যবহারিক জ্ঞানের সমন্বয়ে দেশের সেবা ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ চুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীতে অনুঘটক ও সহায়ক হিসেবেও কাজ করবে।  

অনুষ্ঠানে এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করলে সরকারি সেবার মান যেমনি বৃদ্ধি পাবে, তেমনি জনগণের বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত জনগণের সরকারি সেবা পেতে সময়, খরচ ও যাতায়াত সংখ্যাও কমবে। গবেষণার মাধ্যমে সরকারি সেবাসমূহে উদ্ভাবনকে আরো বেশি উৎসাহিত করা যায় যা সেবা প্রদানকে আরো ত্বরান্বিত, স্বচ্ছ ও উন্নত করবে। আর এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণও বক্তব্য প্রদান করেন। তারা বলেন, এ সমঝোতা স্মারক-এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। তাদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ তৈরি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং তারা সরকারি সেবা সম্পর্কে ধারণা পাবে।

স্বাগত বক্তব্যে সমঝোতা স্মারকের উদ্দেশ্য তুলে ধরে এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি এডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, এর মাধ্যমে সরকারি সেবার মানোন্নয়ন এবং সরকারি সেবায় উদ্ভাবনের পথ আরো উন্মুক্ত হলো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা, কর্মসূচী বা প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে সরকারি সেবার তথ্য ও সহযোগিতা পাবেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনে সম্পৃক্ত হতে পারবেন।

উল্লেখ্যে, এটুআই প্রোগ্রামের উদ্যোগে ইতোমধ্যে দেশের স্বনামধন্য ৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তজার্তিক পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় ও সিংগাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিংগাপুর-এর সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা ও গবেষণাপত্র প্রকাশ এবং দক্ষতা উন্নয়ন সহ বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনসমূহ তাদের একাডেমিক কোর্সে অর্ন্তভূক্তকরণ, উদ্ভাবিত ইনোভেশন লার্নিং প্রোগ্রামের উপর মাস্টার্স/ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান এবং তথ্য-প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ের উপর অষ্ট্রেলিয়ায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

এই সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপকগণ, এটুআই প্রোগ্রামের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত