নর্থ সাউথের শিক্ষকের খোঁজ মেলেনি এখনও

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:১৩

সাহস ডেস্ক

তিন দিন পার হলেও নিখোঁজ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান সিজারের খোঁজ মেলেনি। গত মঙ্গলবার খিলগাঁওয়ের বাসার বাইরে যাওয়ার পর থেকে তার আর সন্ধান মিলছে না।

খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, গত ৭ নভেম্বর (মঙ্গলবার) খিলগাঁও এলাকা থেকে আপন দুই ভাই প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান ও ফয়সাল রহমান নিখোঁজ হওয়ার পর জিডি হয়। আসাদুজ্জামান মোবাইল ফোন সেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। পরে জানা যায়, ওই দুই ভাইকে র‌্যাব আটক করেছিল। তাদের মধ্যে একজনের জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততা পেয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর অপরজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুবাশ্বার হাসান সিজারের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সংস্থাগুলোও চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই শিক্ষকের বোন তামান্না তাসমীম জানান, তার ভাই মঙ্গলবার কর্মস্থলে যেতে বাসা থেকে বের হন। দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন। বিকেলে আগারগাঁও যান। সেখানে সর্বশেষ ফোনে কথা হয়। এরপর এমন একজন মানুষ নিখোঁজ হয়ে গেলেন! মুবাশ্বারের জন্য পুরো পরিবারই উৎকণ্ঠায় রয়েছে। মুবাশ্বার শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পেও কাজ করেন।

অন্য এক স্বজন জানান, গতকাল মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে মুবাশ্বারের বাবা ও মাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন গোয়েন্দারা। তারা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি তাকে উদ্ধারে চেষ্টার কথাও জানিয়েছেন।

অপরদিকে গত ১০ অক্টোবর সাংবাদিক উৎপল দাস নিখোঁজ হন। এক মাস পার হলেও তার ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুধু শিক্ষক মুবাশ্বার বা সাংবাদিক উৎপল নন, গত আড়াই মাসে রাজধানী ও আশপাশের এলাকা থেকে রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র, শিক্ষক, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ীসহ ১০ জন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন।

এসব ঘটনার একটিতে অপহরণ মামলা ও অন্য ঘটনায় সংশ্নিষ্ট থানায় জিডি হলেও তদন্তে অগ্রগতি নেই।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, একটি সভ্য রাষ্ট্রে এ ধরনের অবস্থা চলতে পারে না। যে কোনো নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন কারও কাম্য নয়। যদি অপরাধী কাউকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তাকেও খুঁজে বের করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি মিডিয়া মাসুদুর রহমান বলেন, প্রত্যেকটি ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে পাওয়ার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা পুলিশ চালাচ্ছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, যে কোনো নিখোঁজের ঘটনা জানার পরপরই অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত হয়। অনেক সময় অন্যকে ফাঁসাতে কেউ কেউ আত্মগোপনে থাকে। আবার পাওনাদারকে টাকা দিতে ব্যর্থ হয়েও কেউ গা-ঢাকা দেয়। 

সাহস২৪.কম/জুয়েনা/ আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত