কুড়িগ্রামে রাজাকারের নামে কলেজকে জাতীয়করণ

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০১৬, ১৭:২০

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে বীরমুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলেজকে জাতীয়করণের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ১৯৭১ সালের রাজাকারের নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজকে জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

কুড়িগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সাবেক গণপরিষদ সদস্য মরহুম আব্দুল্ল্যা সোহরাওয়ার্দি প্রতিষ্ঠিত রাজারহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজকে জাতীয়করণের ঘোষণার পর তা বাতিল করে রাজাকারের নামে প্রতিষ্ঠিত মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রী কলেজকে নতুন করে জাতীয়করণ ঘোষণার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের ৩০ জুন সারাদেশে ১৯৯টি কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণায় রাজারহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজে ১৪৭ নম্বর সিরিয়ালে অর্ন্তভুক্ত ছিল। কিন্তু ১৮ আগষ্ট একটি অনলাইন পত্রিকায় রাজারহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজের পরিবর্তে রাজাকারের নামে মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রী কলেজের নাম প্রকাশিত হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন মীর ইসমাইল হোসেন ছিল একজন কুখ্যাত রাজাকার। ১৯৭১ সালে তার নেতৃত্বে লালমনিরহাট থানার রাজারহাট, তিস্তা, ঘড়িয়ালডাঙ্গা, চাকিরপশার, ছিনাই এলাকায় অগ্নিসংযোগ লুটতারাজ এবং নিরীহ বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়। এ ছাড়াও ’৭১ এর ১৬ জুন তার নিদের্শে ও পরিকল্পনায় ঘড়িয়াল ডাঙ্গায় হিন্দু প্রধান সেন পাড়া গ্রামে আক্রমণ পরিচালিত হয় লুটপাটকরা হয় হিন্দু বাড়ী। এ তথ্য মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস বইসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এলাকার সকলে তাকে একজন কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে চেনে। তাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার যখন ক্ষমতায় তখন এই রাজকারের নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজ জাতীয়করণ হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। 

শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মীর ইসমাইল হোসেনের প্রতিষ্ঠিত কলেজকে নতুন তালিকা থেকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মরহুম আব্দুল্ল্যাহ সোহরাওয়ার্দির প্রতিষ্ঠিত কলেজকে পুণরায় জাতীয়করণের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করার দাবী জানান বক্তারা।

এসময় বক্তব্য রাখেন সাবেক গণপরিষদ সদস্য আব্দুল্ল্যাহ সোহরাওয়ার্দির স্ত্রী সামসুন নাহার সোহরাওয়ার্দি, কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষক নেতা আদম আলী সরকার, এরশাদুল নবী নবীন প্রমূখ। 

পরে প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত