রাবির ভাষা বিভাগ: শ্রেণিকক্ষ সংকটে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৮:৫৪

রাবি প্রতিনিধি

প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছর পরও ক্লাস সংকট কাটেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভাষা বিভাগের। এক বর্ষের ক্লাস শেষ না হতেই অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা এসে ভিড় জমায় ওই ক্লাসের সামনে। এ যেন নিত্য দিনের ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে ভোগান্তির শেষ হচ্ছে না ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত ভাষা বিভাগে উদু, ফার্সি ও সংস্কৃত- এই তিনটি বিষয়ে আলাদাভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। প্রতিটি অংশে রয়েছে ৫টি করে বর্ষ। তবে ১৫টি বর্ষের ক্লাসের জন্য মাত্র চারটি শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনে উর্দূর জন্য ৩০৪, সংস্কৃতর জন্য ৩০২ এবং ফারসির জন্য ৪০২ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঈসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের ৩২৬ নম্বর কক্ষটি উর্দু, ফার্সি ও সংস্কৃত যৌথভাবে ব্যবহার করে। কিন্তু ১৫ টি বর্ষের শিক্ষার্থীদের মাত্র ৪টি শ্রেণিতে ক্লাস নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় বিভাগকে।  

ভাষা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে রুটিনের ক্লাসগুলো ঠিকমত হয় না। তার উপর শিক্ষকেরা রুটিন না মেনে নিজেদের সুবিধামতো ক্লাস নেওয়ায় বাধ্য হয়ে অন্য বর্ষকে শ্রেণিকক্ষের বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। কোন কোন সময় দুই-তিনটা বর্ষও ক্লাসের অপেক্ষায় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। 

উর্দূ বিষয়ে পড়া কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘বিভাগের রুটিনে প্রতিদিন ২ থেকে ৪টা ক্লাস রয়েছে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা হয় না। ১ থেকে ২টা ক্লাস হয়। আবার শিক্ষকরা রুটিনের বাইরে ক্লাস নিতে গিয়ে একই সময়ে কয়েক বর্ষের ক্লাস পড়ে। দাঁড়িয়ে তখন অপেক্ষা করতে হয় ক্লাস করার জন্য। পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।’

‘ক্লাস হোক আর না হোক যেকোন ভাবে সিলেবাস শেষ করে দেওয়া হয়। ক্লাস ঠিক ভাবে না হওয়ায় পাঠ্যসূচি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তখন কোন ভাবে সিলেবাস শেষ করে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে করে ভাষার মতো কঠিন বিষয়ের অনেককিছুই আমাদের জানার বাইরে থেকে যায়। পরবর্তীতে অনেক কিছু বুঝতেও অসুবিধা হয়-এমনটি অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।’ 

এ বিষয়ে ভাষা বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আতাউল্যাহ বলেন, বিভাগে ১৫টি বর্ষের জন্য ৬টি কক্ষ রয়েছে। এতোগুলো বর্ষের ক্লাস ঠিক সময়ে নেওয়া সম্ভব হয় না। তারপরও আমরা ঠিকভাবে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করি। অনেক আগে থেকেই এই সংকট রয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অনেকবার কক্ষের জন্য আবেদন করেছি। নতুন কোন বিল্ডিং সম্পন্ন হলে বিভাগকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়ার কথা রয়েছে।  

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ভাষা বিভাগের কক্ষ সংকট অনেক আগে থেকে রয়েছে। নতুন কক্ষ না থাকায় শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে অর্থ বরাদ্দ পেলেই নতুন একাডেমিক ভবনের কাজ শুরু করা হবে। তখন এ ধরনের সমস্যা অনেকাংশেই কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত