পরিচালক শিকদার আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন: প্রিয়াঙ্কা

প্রকাশ : ০৭ মে ২০১৭, ১৬:৪৩

সাহস ডেস্ক

রফিক শিকদার পরিচালিত ‘হৃদয়জুড়ে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে ঢাকায় এসেছিলেন কলকাতার চিত্রনায়িকা প্রিয়াঙ্কা সরকার। ছবিটিতে নায়ক নিরবের বিপরীতে অভিনয় করছেন তিনি। পরিচালক ছবির ৬০ শতাংশ শুটিং শেষ করেই নায়িকার প্রেমে পড়েন এবং নানাভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ‘হেনস্তা’ করে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে  প্রতিবাদ স্বরূপ বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরেন প্রিয়াঙ্কা সরকার। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে প্রিয়াঙ্কা স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি বিচারের আহ্বান জানান।

প্রিয়াঙ্কা ফেসবুকে লিখেছেন, আজ আমি আমার সকলের সঙ্গে একটা বিষয় শেয়ার করতে চাই, সেটা হচ্ছে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমি ঢাকা গিয়েছিলাম আমার প্রথম বাংলাদেশি ছবি ‘হৃদয় জু‌ড়ে’-এর শুটিং করতে এবং সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশে আমার প্রযোজনা টিম, সহশিল্পীসহ সকলের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু এত কিছুর পরেও অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে এই ছবির পরিচালক Rafique Sikder চূড়ান্ত অপেশাদার একজন মানুষ। বাংলাদেশের শিডিউল শেষ হলেও আমার সিনগুলো শেষ করতে পারেননি পরিচালক ওনারই পেশাদারিত্বের অভাবে। অকারণেই উনি শুটিং-এর সময় আমার সাথে কাজের বাইরে অন্যান্য বিষয় নিয়ে গল্প করতে চাইতেন। সময়ে-অসময়ে মেসেজ করতেন নানা রকম। যেগুলো কাজ সংক্রান্ত নয়! মানে বাড়তি অ্যাটেনশন পাওয়ার চেষ্টা এবং অনেক সময়েই আমি প্রতিবাদও করেছি কিন্তু তবুও উনি নিজেকে সংশোধন করেননি। 
এরপর আমার শুটিং সিডিউল শেষ হওয়ার পরই আমি কলকাতা ফিরে আসি। তবু আমি রাজি ছিলাম চুক্তি শেষ হওয়ার পরেও বাংলাদেশে গিয়ে ছবির বাকি অংশের কাজ শেষ করতে। যাইহোক কলকাতা ফেরার পরই উনি শুরু করেন আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করা। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় উনি আমাকে বারবার মেসেজ করতেন। বলতেন, উনি নাকি আমাকে মিস করছেন! একটা সময়ের পর আমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন! বারবার ব্লক করা সত্ত্বেও উনি থামেননি। উনি সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টেও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন আমাকে। এসব সত্যি অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ শিল্পী হিসেবে আমরা ন্যূনতম সম্মানটুকু অন্তত আশা করি সবার কাছে। 
আমি প্রমাণস্বরূপ ওনার করা হোয়াট্সঅ্যাপ এবং ফেসবুকের মেসেজের স্ক্রিনশটও শেয়ার করছি তাহলেই আপনারা এই মানুষটির মানসিকতা বুঝতে পারবেন। এই লোকের কী বিচার হওয়া দরকার সেটা আমি আমার বাংলাদেশের বন্ধুদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি। আমার সত্যি এ সমস্ত এভাবে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম এই ধরনের হয়রানির একটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার। কারণ এই ধরনের নিম্ন মানসিকতার লোকজন দুই বাংলার চলচ্চিত্রজগতের জন্যই হানিকারক। এরা শিল্প এবং শিল্পী কাউকেই সম্মান করতে জানে না। এবং দুই বাংলার শিল্পীদেরই আমার অনুরোধ এই রকম ঘটনার সম্মুখীন হলে প্রতিবাদ করুন ও সতর্ক হোন। নইলে চুপ করে থাকলে এরা আরো পেয়ে বসবে। আর একজন শিল্পী হয়ে আমি এটুকুই বলতে পারি, ঈশ্বর ওনার শুভবুদ্ধি জাগ্রত করুন।”

এ বিষয়ে পরিচালক রফিক শিকদারের জানান, প্রিয়াঙ্কাকে তিনি বিয়ে করতে চান। শিকদার বলেন, আমি প্রিয়াঙ্কাকে বিয়ে করতে চাই, আমার মনে হয়েছে তার আমার মতো একজন গার্জিয়ান থাকা দরকার। তার সুন্দর একটা মন আছে। আমি তার ভালোটা ভালোবেসে ফেলেছি। আমি জানি তার একটি ছেলে আছে, তার ছেলেকেও আমি ভালোবেসে ফেলেছি, আমি মনে করি ভালোবাসা কোনো অন্যায় নয়, আর কারো কাছে ভালোবাসার জন্য চাপও দিচ্ছি না। পৃথিবীর কোনো আদালত নেই যেখানে ভালোবাসার অপরাধে সাজা হতে পারে।

কীভাবে প্রিয়াঙ্কার প্রেমে পড়েন জানতে চাইলে শিকদার বলেন, আমরা শুটিং শুরু করার পর সব কিছু ভালোভাবেই আগাচ্ছিল। কিন্তু একদিন প্রিয়াঙ্কা দেরি করে শুটিংয়ে আসে। কেন দেরি হলো জানতে চাইলে সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আমি তার মাথায় হাত রেখে ঠান্ডা হতে বলি, তখন সে আরো রেগে যায়। আমি কেন গায়ে হাত দিলাম তার জন্য সে আরো রাগ করতে থাকে। তখন আমার মনে হয় সে স্বাভাবিক নেই। তারপর থেকে সে সব সময় আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। একদিন আমার গায়ে খাবার ছুড়ে মারে, আমি বুকে ব্যথাও পেয়েছিলাম। আমি দূর থেকে তাকে দেখতাম আর ভাবতাম সে কেন আমার সাথে এমন করছে? একসময় আমার মনে হলো সে আসলে অস্বাভাবিক জীবনযাপন করছে, তার একজন ভালো বন্ধু দরকার। আমি তার প্রেমে পড়ে যাই।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই কি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন পরিচালক? জবাবে তিনি বলেন, নিরবের একটা সিক্যুয়েন্সের শুটিং হচ্ছিল, সেখানে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে, গোসল করানো হচ্ছে।  আর প্রিয়াঙ্কার বিয়ে হবে, তাকেও গোসল করানো হবে। আমি যেহেতু এখনও বিয়ে করিনি, তাই আমার মা-বোনদের কাছে জানতে চাইছিলাম বিয়ের আগে গোসলের কোনো নিয়ম আছে কি না। তখন প্রিয়াঙ্কা আমার সামনে এসে হাসিমুখে দাঁড়ায়। আমাকে বলে আমি যেন একটা বিয়ে করি। বধূবেশে প্রিয়াঙ্কাকে দেখে আমার ভালো লাগে। আমি তখন তাকে বলি, আমি তাকে বিয়ে করব। তারপর আমরা ফেসবুকে প্রায়ই কথা বলতাম, এরই মধ্যে আমি তাকে ফেসবুকে বিয়ের প্রস্তাব দিই। আমি আসলে মেয়েটিকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম, এখনো বাসি, সে যদি রাজি থাকে বিয়ে করতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত