শাস্ত্রীয় সংগীত উৎসবের পর্দা উঠছে সন্ধ্যায়

প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৪:৫৮

সাহস ডেস্ক

ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পীদের নিয়ে পাঁচ দিনের বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সংগীত উৎসবের পর্দা উঠছে ২৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায়।

ধানমন্ডির শেখ কামাল আবাহনী মাঠে উৎসবের জন্য উপযোগী করে তোলা হয়েছে ছোট্ট ভেন্যুটি। এবারের আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয়েছে এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে। উৎসবের এই পাঁচটি রাত যন্ত্রের ধুনের সঙ্গে জাদু ছড়াবে রাগাশ্রয়ী ধ্রুপদ সংগীত; সেই সঙ্গে থাকবে ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি নৃত্যের পরিবেশনা।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সন্ধ্যা ৭টায় উৎসবের উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগ সভাপতির উপদেষ্টা ও আবাহনী লিমিটেডের সভাপতি সালমান এফ রহমান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা।

কাজাখস্থানের আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমোনিক অর্কেস্ট্রার সংগীতে শুরু হবে এবারের উৎসব, তাতে নেতৃত্ব দেবেন ভারতের বিখ্যাত বেহালা শিল্পী এল সুব্রামনিয়াম।

বেঙ্গলের আগের পাঁচটি উৎসবের আয়োজন হয়েছিল বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে। সেখানেই ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর এবারের উৎসব আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। কিন্তু সেনা ক্রীড়া সংস্থার অনুমতি না মেলায় শাস্ত্রীয় সংগীতের বড় এ উৎসবের আয়োজন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এই অবস্থায় গত ২২ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে বেঙ্গলের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু বলেন, এ বছর উৎসবটি হচ্ছে না।

পরে ১৪ নভেম্বর আবুল খায়ের বলেন, ধানমন্ডির শেখ কামাল আবাহনী মাঠ বরাদ্দ পাওয়া গেছে; উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব এ বছরই হবে।

যারা উৎসবে যোগ দিতে চান, তাদের জন্য এবারও অনলাইন নিবন্ধনের ব্যবস্থা করেছে বেঙ্গল কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে নিবন্ধনের কোনো সুযোগ নেই।

শাস্ত্রীয় সংগীত উৎসবের অনুষ্ঠানসূচি

২৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার)

উদ্বোধনে থাকছে কাজাখস্থানের আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমোনিক অর্কেস্ট্রা এবং এল সুব্রামনিয়ামের পরিবেশনা। এরপর সরোদ পরিবেশন করেবেন রাজরূপা চৌধুরী, খেয়াল পরিবেশন করবেন বিদূষী পদ্মা তালওয়ালকর, সেতার বাজিয়ে শোনাবেন ফিরোজ খান, খেয়াল পরিবেশন করবেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী সুপ্রিয়া দাস। প্রথম রাতের পরিবেশনা শেষ হবে রাকেশ চৌরাসিয়ার বাঁশি আর পূর্বায়ন চ্যাটার্জির সেতারের যুগলবন্দিতে।

২৭ ডিসেম্বর (বুধবার)

অদিতি মঙ্গলদাস ড্যান্স কোম্পানির শিল্পীদের কত্থক নৃত্যে শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের পরিবেশনা। সমবেত তবলা বাদনে অংশ নেবেনে বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্তুর বাজিয়ে শোনাবেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, খেয়াল পরিবেশন করবেন পণ্ডিত উল্লাস কশলকর, সেতারে সুর তুলবেন ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ খান এবং ধ্রুপদ পরিবেশন করবেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী অভিজিত কুণ্ডু। দ্বিতীয় রাতের পরিবেশনা শেষ হবে পণ্ডিত রনু মজুমদারের বাঁশি এবং পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোসের সরোদের যুগলবন্দিতে।

২৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার)

উৎসবের তৃতীয় দিন শুরুতেই রয়েছে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীদের সেতার-বাদন। ঘাটম ও কঞ্জিরা বাজিয়ে শোনাবেন বিদ্বান ভিক্ষু বিনায়ক রাম ও সেলভাগণেশ বিনায়ক রাম। খেয়াল পরিবেশন করবেন সরকারি সংগীত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সরোদ পরিবেশন করবেন আবির হোসেন, বাঁশি বাজিয়ে শোনাবেন গাজী আবদুল হাকিম, ধ্রুপদ পরিবেশন করবেন পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকর এবং বেহালায় সুর তুলবেন বিদূষী কালা রামনাথ। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর খেয়াল পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তৃতীয় রাতের পরিবেশনা।

২৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার)

উৎসবের চতুর্থ দিন পরিবেশনার শুরু হবে শাস্ত্রীয় নৃত্যে। মনিপুরি, ভরতনাট্যম ও কত্থক নৃত্য পরিবেশন করবেন সুইটি দাস, অমিত চৌধুরী, স্নাতা শাহরিন, সুদেষ্ণা স্বয়মপ্রভা, মেহরাজ হক এবং জুয়াইরিয়াহ মৌলি। সরোদ বাজিয়ে শোনাবেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। খেয়াল পরিবেশন করবেন ওস্তাদ রাশিদ খান, সরোদ বাজাবেন পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, বেহালা বাজিয়ে শোনাবেন ড. মাইশুর মঞ্জুনাথ, খেয়াল পরিবেশন করবেন পণ্ডিত যশরাজ ও চেলোতো সংগীত পরিবেশন করবেন সাসকিয়া রাও দ্য-হাস। সবশেষে রয়েছে পণ্ডিত বুদ্ধাদিত্য মুখার্জির সেতার পরিবেশনা।

৩০ ডিসেম্বর (শনিবার)

বিদূষী সুজাতা মহাপাত্রের ওড়িশি নৃত্যে শুরু হবে উৎসবের পঞ্চম ও শেষ দিনের আয়োজন। মোহন বীণা পরিবেশন করবেন পণ্ডিত বিশ্বমোহন ভট্ট, খেয়াল পরিবেশন করবেন ব্রজেশ্বর মুখার্জি, যৌথভাবে সেতার বাদনে অংশ নেবেন পণ্ডিত কুশল দাস ও কল্যাণজিত দাস, সেতার বাজিয়ে শোনাবেন পণ্ডিত কৈবল্যকুমার। অন্যান্যবারের মত এবারও পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশিবাদনে পর্দা নামবে উৎসবের।

সাহস২৪.কম/জুয়েনা/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত