আমাদের কান প্রীতি ও বাস্তবতা

প্রকাশ : ০৮ মে ২০১৬, ০৮:১৮

মাঝেমাঝেই আলোচনায় দেখা যায় অমুক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাচ্ছে অমুক সিনেমা। তমুক আন্তর্জাতিক ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছে তমুক সিনেমা।

এর মধ্যে আমাদের দেশের সিনেমার লোকজন সবচেয়ে বেশী কান ধরে টানাটানি করে। হ্যাঁ,কান চলচ্চিত্র উৎসব দুনিয়ার সব সিনেমা প্রেমীদের কাছেই গ্রহণযোগ্য ও কাঙ্ক্ষিত উৎসব। আমাদের সিনেমা কানে যায় সেই খবর ফলাও করে প্রচার করা হয় কিন্তু কান থেকে সেই সিনেমা কবে দেশে প্রত্যাবর্তন করে সেই খবর আর জানা যায়না। এবার জেনে নেয়া যাক কান চলচ্চিত্র উৎসবের কিছু বিষয়। 

আপনি চাইলে আপনার বিয়ের ভিডিও নিয়েও দৌড় লাগাতে পারেন কানের পথে, কেউ আপনাকে আটকাবে না। বরং যদি আপনি পলিটিক্স বুঝে নিজের ঢোলটা ঠিকমতো বাজাতে পারেন তবে আমাদের মিডিয়াই আপনাকে হিরো বানিয়ে দেবে। কান চলচ্চিত্র উৎসব চলাকালীন সময় সেখানে চলচ্চিত্র বিষয়ক আন্তর্জাতিক নানান ব্রোকার বা দালাল বা লবিং প্রতিষ্ঠান তাদের কেন্দ্র স্থাপন করে। যেখানে পৃথিবীর যে কেউ টাকা দিয়ে তার চলচ্চিত্র সেখানে প্রদর্শন করতে পারেন। আর প্রদর্শন স্থান হিসেবে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো বেছে নেয় কান চলচ্চিত্র উৎসবের কোল ঘেঁষা কোন অডিটরিয়াম। আর সেখানকার প্রদর্শনীটি উন্মুক্ত রাখা হয় কান উৎসবে আমন্ত্রণ পেয়ে যাওয়া বিভিন্ন চলচ্চিত্র কলাকুশলী এবং সাংবাদিকদের জন্য। অর্থাৎ টাকা থাকলেই যে কেউ তার সিনেমাকে সেখানে এন্ট্রি করাতে পারে। কান উৎসবে ‘মার্চ দ্যু ফিল্মে’ টাকা হলে যে কোন ছবিই হল ভাড়া নিয়ে দেখানো যায়। রীতিমত আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে চলে এই বরাদ্দ। বলা হয়ে থাকে, সেখানে উপস্থিত থাকেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রযোজক, প্রদর্শকরা। যারা এই প্রদর্শনী থেকে কোন চলচ্চিত্র পছন্দ করলে সেটি কিনে নেন বা চুক্তি করেন আন্তর্জাতিকভাবে বাণিজ্যের বা প্রদর্শনের।

বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতা বিভাগ,প্রতিযোগিতা বিভাগের বাইরের ছবি,সিনেফন্ডেশন ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পাশাপাশি রয়েছে মার্শে দ্যু ফিল্ম। প্রযোজকরা উৎসবের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে অর্থের বিনিময়ে নাম নিবন্ধন করে এবং প্রদর্শনী ভাড়া নিয়ে এ বিভাগে নিজেদের ছবি দেখাতে পারেন। নাম নিবন্ধনের জন্য প্রত্যেক প্রযোজককে গুনতে হয় ২৮২.৫০ ইউরো। আর প্রডিউসার্স নেটওয়ার্কের ব্যাজ পেতে হলে দিতে হয় ৩৩৯ ইউরো করে। প্রদর্শনী ভাড়া করার অর্থ আরও বেশি।

বিদেশী চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণের ফাঁকা বুলি দিয়ে এভাবে সাধারণ দর্শককে বোকা বানানোটা কোন কাজের কথা নয়। বরং নিজস্ব মেধা আর সৃষ্টিশীলতা দিয়ে আমাদের সিনেমা একদিন বিশ্ব আসরে সসম্মানে জায়গা করে নেবে সেটাই কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত