কুড়িগ্রামে বুড়িতিস্তা দখল করে ভবন নির্মাণ

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৪:৩৮

শফিউল আলম শফি

কুড়িগ্রামের এক সময়ের খরস্রোতা বুড়িতিস্তা নদীটির প্রায় অধিকাংশ জমি স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের দখলে চলে গেছে।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে বুড়িতিস্তার জমি দখল করে পাকা স্থাপনা ও পুকুর তৈরি করে ব্যবসা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। এ অবস্থায় ভূমি দস্যুদের কবল থেকে বুড়িতিস্তার জমি দখল মুক্ত করার জন্য ‘বুড়িতিস্তা বাঁচাও উলিপুর বাঁচাও’ ব্যানারে আন্দোলন করছে ‘কুড়িগ্রাম রেল-নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণ কমিটি’ এবং উলিপুর প্রেস ক্লাবসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

উলিপুরে বিক্ষোভ মিছিল, সাইকেল র‌্যালি, নদীতে পানি ঢেলে প্রতিকি প্রতিবাদসহ দীর্ঘদিন ধরে নানা কর্মসূচী পালন করছেন বুড়িতিস্তা বাঁচাও আন্দোলনকারীরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বুড়িতিস্তা নদীটি উলিপুর উপজেলার থেতরাই থেকে উলিপুর উপজেলা শহরের কোলঘেষে চিলমারীর কাচকোল পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে। কিন্তু উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ব্রিজের মুখে বুড়িতিস্তার প্রায় ৩ একর জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন আকতারুজ্জামান অপু।

অন্যাদিকে উলিপুরের নারকেল বাড়ি এলাকায় নদীর প্রায় ২ একর জমি দখল করে পুকুর তৈরি করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল হাকিম। এভাবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘের বুড়িতিস্তায় অন্ততঃ ৪০ জন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি নদী দখল করে পুকুরসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছেন। নদী দখলের ফলে বর্ষাকালে পানিপ্রবাহ বন্ধ হওয়ায় উলিপুর উপজেলা জুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

উলিপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু সাইদ সরকার জানান, ১৯৮৮ সালের বন্যার পর অপরিকল্পিতভাবে বুড়িতিস্তার উৎসমুখ উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নে বাঁধ ও স্লুইচ গেট নির্মাণ করায় স্রোত ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকে। ফলে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘে এই নদীর দুই পাড়সহ মাঝ নদীতে পুকুর তৈরি করে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা।

বুড়িতিস্তা বাঁচাও উলিপুর বাঁচাও কমিটির আহবায়ক আলমগীর জানান, আমরা ১৯৮৮ সালের পর থেকে দখল হতে থাকা বুড়িতিস্তা বাঁচানোর আন্দোলনে নেমেছি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। বুড়িতিস্তা দখল মুক্ত করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে এলাকার জীববৈচিত্র রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেবার জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, বুড়িতিস্তা পুনঃখনন ও স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনার জন্য প্রকল্প তৈরি ও জরিপের কাজ চলছে। প্রকল্পটি পাশ হলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নদীটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত