আজ বিশ্ব বাঘ দিবস

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০১৮, ১১:১১

সাহস ডেস্ক

২৯ জুলাই, বিশ্ব বাঘ দিবস। বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, চীন, নেপাল, রাশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় বাঘ রয়েছে। তাই এ ১৩টি দেশে এ দিনটি পালিত হচ্ছে। 

এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে-‘বাঘ বাঁচাই, বাঁচাই বন, রক্ষা করি সুন্দরবন’। সর্বশেষ শুমারি অনুসারে, বিশ্বের মধ্যে বাঘ সংরক্ষণে ভারত বর্তমানে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। বাংলাদেশে বাঘ বলতে আমরা প্রধানত সুন্দরবনের ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’কেই বুঝি। 

এবার সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটে দু’টি উপজেলায় দিবসটি পালিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে রবিবার (২৯ জুলাই) সকালে বাগেরহাটের শরণখোলা ও মোংলা উপজেলায় র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। র‌্যালি ও আলোচনা সভায় উপজেলা প্রশাসন, সুন্দরবন বন বিভাগের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবেন। 

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বিশ্ব বাঘ দিবসটি বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে। গত বছর বাঘ দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠান হয়েছিল বাগেরহাটে। এবার এ হচ্ছে খুলনায়। এছাড়া বন সংলগ্ন এলাকা বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলায় দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনসংলগ্ন জেলার মানুষকে সচেতন ও বাঘ রক্ষায় সম্পৃক্ত করতে দুই বছর ধরে ঢাকার বাইরে জাতীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে ‘বাঘ দিবস’।

জানা যায়, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা গণনায় সুন্দরবনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয় শুমারি। ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে এ শুমারির মাঠ পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে মে মাসে। কিন্তু দুই মাসেও শুমারির ফল প্রকাশ করা হয়নি। যে কারণে বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী বছরের প্রথম দিকে ফলাফল প্রকাশের সম্ভাবনার কথা বলছেন কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সুন্দরবনে তৃতীয় দফায় ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনা বা পরিবীক্ষণ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। সুন্দরবনের খুলনা ও শরণখোলা রেঞ্জের দুটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ৪৭৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় করা হয় এই মনিটরিং। ২৩৯টি পয়েন্টে গাছ বা খুঁটির সঙ্গে ৬৭০টি ক্যামেরা বসিয়ে এ বাঘ মনিটরিং করা হয়। এর আগে প্রথম দফায় ২০১৩ সালে সুন্দরবনের ২৬ শতাংশ এলাকায় ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘ শুমারি হয়েছিল। ওইসময় বাঘের উপস্থিতি বেশি এমন এলাকা বেছে নেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের কাজ করা হয়। 

২০১৫ সালের মার্চে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। এর আগে ২০০৪ সালের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা রয়েছে ২১টি। তবে সর্বশেষ সুন্দবনের বাঘের সংখ্যা, অবস্থান ও গতিপ্রকৃতি জানতে আবারও মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করে বন বিভাগ।

সূত্র জানায়, ২০১০ সালে জানুয়ারি মাসে থাইল্যান্ডের হুয়ানে অনুষ্ঠিত হয় টাইগার রেঞ্জ দেশগুলোর ‘এশিয়া মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স’। এখান থেকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, প্রতিবছর ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হবে। ওই সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়। সম্মেলনে বাঘ সংরক্ষণে ৯ দফা পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত