রোগীদের চরম ভোগান্তি কালিহাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০১৮, ১৬:২৩

তপু আহম্মেদ

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যাপক অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম চলছে। সেবা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। তবে সকল অভিযোগই অস্বীকার করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন নেই। আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনও নষ্ট। ফলে সাধারণ রোগীদের রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন পরীক্ষা বাহির থেকে বেশি টাকা দিয়ে করতে হচ্ছে। রোগী আনা নেওয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিও ব্যবহার অনুপযোগী। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে ভর্তি রোগীদের সাথে প্রতিনিয়তই খারাপ আচরণের। হাসপাতালের বহির্বিভাগের কর্মরত ডাক্তাররা সময়মত অফিস করেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া নিম্নমানের খাবার সরবরাহের কারণে অনেক রোগীই হাসপাতালের খাবার খেতে পারেন না।

কালিহাতী উপজেলার পাছচারান গ্রামের বাদল মিয়ার স্ত্রী শান্তা বেগম হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বলেন, চারদিন পর আমার বিছানার নোংড়া কাপড় পরিবর্তন করে দিয়েছে। আর খাবার অত্যন্ত নিম্নমানের। ডাল আর পানির তফাৎ বুঝা যায় না।

হামিদপুরের শামছুন্নাহার নামের আরেক রোগী বলেন, ডাকতে ডাকতে ডাক্তার নার্সরা আসতে চায় না। ডাকলে নার্সরা ধমকা ধমকি করেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগের ডাক্তার রুমী আলমের হাসপাতালে ৮টায় আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। বেলা ১টায় তিনি বলেন আমি ঢাকা থাকি, তাই আসতে দেরী হয়েছে।

হাসপাতালের প্রধান সহকারীর নাম লাল মাহমুদ মিয়া। সবাই তাকে বড়বাবু বলে ডাকেন। তাকে খুশি না করলে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, বিল ভাউচার সময়মত পাওয়া যায় না বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। বড়বাবুর হাতে হাসপাতালের কর্মচারীরা জিম্মি।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী ফরহাদুল হকের বিরুদ্ধেও উঠেছে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ। তিনি স্টোর রুমে থাকা এসি মেশিন নিজের থাকার রুমে লাগিয়েছেন। এসব বিষয়ে ডা. কাজী ফরিদুল হক বলেন হাসপাতালে কোন অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম নেই। তবে কিছু জরুরী যন্ত্রাংশ মেরামত এবং ক্রয় করতে হবে। এতে স্বাস্থ্য সেবা কিছুটা হলেও ব্যাহত এবং রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে। এরজন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। 

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. শরিফ হোসেন খান বলেন, হাপাতালের এসব অভিযোগ সম্পর্কে আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কিছুই জানান নাই। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অনুমতি ছাড়া এসি মেশিন নিজের রুমে লাগাতে পারেন না। ডাক্তারদের সঠিক সময়ে না আসা এবং নার্সদের দুর্ব্যবহারের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত