আবারও সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০১৭, ১৬:৫৮

সাহস ডেস্ক

রাজধানীর গ্রিনরোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ১৮ দিন বয়সী এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

মৃত নবজাতকের স্বজনদের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় হাসপাতালের এক কর্মীর হাতে মৃত শিশুটির একজন আত্মীয় আহত হন। পরে রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ভাঙচুর করে। হাসপাতালটিতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত নেই।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত মৃত নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জুন ( রবিবার) ওই নবজাতককে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দুই দিন পর তাকে নেওয়া হয় নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ)। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়। ২৩ জুন (শুক্রবার) তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়। ২৪ জুন (শনিবার) সকালে মারা যায় নবজাতকটি।

মৃত নবজাতকের ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়, সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। পাশাপাশি তার হার্টের একটি এক্সরে রিপোর্টও সংযুক্ত রয়েছে।

নবজাতকের স্বজনরা বলছেন, তার শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কিছুই জানায়নি। পরে ২৪ জুন (শনিবার) শিশুটির মৃত্যু হলে এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় হাসপাতালের এক কর্মীর আঘাতে ওই নবজাতকের এক আত্মীয় মাথায় আঘাত পান। তাকে পাশেই অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ভাঙচুর করে।

নিহত শিশুটির স্বজনদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের কাউকে হাসপাতালে খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের দুটি গেটও আটকানো রয়েছে। খবর পেয়ে ধানমন্ডি থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন।

এদিকে, নবজাতকের মৃত্যুর পর তার বাবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন,  ২৪ জুন (শনিবার) সকালে হাসপাতালের চিকিৎসক শাখাওয়াত আলম আমাদের জানান যে নবজাতক মারা গেছে। কিন্তু তাদের কথাবার্তা সন্দেজনক। আমাদের কাছে তাদের আচরণ ও কথাবার্তায় মনে হচ্ছে, তারা আমার শিশু সন্তানকে মেরে ফেলেছে।

এ বিষয়ে সেন্ট্রাল হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (এনআইসিইউ) দায়িত্বে থাকা অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ও বিএসএমএমইউয়ের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাখাওয়াত আলম বলেন, নবজাতকটি হাসপাতালে ভর্তি হয় ১১ জুন। তখন তার রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা ছিল ১৭ থেকে ১৮। নাজুক শারীরিক অবস্থার কারণে তাকে এনআইসিইউতে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে রাখতে হয়েছিল তিন-চার দিন। একটা সময় সে এই ভেন্টিলেশন ছাড়াই শ্বাস নিতে শুরু করে। কিন্তু এত কম বয়সী শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে। শিশুটির রক্তে ইনফেকশন ছিল, যেটা অনেক চেষ্টা করেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারিনি। বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। তার স্বজনদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আমরাও শিশুটির মৃত্যুতে মর্মাহত। কিন্তু ওনারা যেটা বলছেন, সেটাও সঠিক বলছেন না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত