নওগাঁয় চলছে সুস্বাদু কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:২৯
আসছে শীত। তাই সুস্বাদু কুমড়া তৈরির ধুম পড়েছে নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রাম। গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়বে রোদে চাটাইয়ের উপড় সারি সারি করে বিছানো সাদা রঙ্গের মাসকালাইয়ের তৈরি কুমড়া বড়ি। কেউ শুকনো বড়িগুলো বাঁশের চাটাই থেকে খুলছে আবার কেউ সেই বড়ি গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। জেলার মধ্যে শুধু খট্টেশ্বর গ্রামেই শুধু কুমড়া বড়ি তৈরি হয়ে থাকে। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্নস্থানে বড়ি সরবরাহ করা হয়।
সকালে সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির উঠানে উঠানে চলে এই বড়ির তৈরির কাজ। বাড়ির গৃহিণী থেকে শুরু করে ছোট-বড় ও বয়স্ক সবাই মিলে তৈরি করছে সুস্বাদু ও অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই কুমড়া বড়ি।
সারা বছর টুকটাক তৈরি হলেও শীত মৌসুমে এই বড়ি তৈরির ধুম পড়ে। এই বড়ি মূলত শীতকালের একটি আকর্ষণীয় খাবার। বর্তমানে এই গ্রামের সকলেই সুস্বাদু কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানা যায়, উপজেলার মধ্যে শুধুমাত্র রাণীনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের খট্টেশ্বর গ্রামে শত বছরের ঐতিহ্যপূর্ণ এই কুমড়া বড়ি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করে আসছে এখানকার কারিগররা। এই গ্রামের ২৫-৩০টি পরিবারের মানুষ পৈত্রিকভাবেই তৈরি করে আসছে এই কুমড়া বড়ি। তবে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ অনেকটাই কমে গেছে বলে জানান কারিগররা।
খট্টেশ্বর গ্রামের জীবন কুমার জানান, এই পেশাটি আমাদের বাপ-দাদার। তাই আজো তা করে আসছি। এই বড়ি মূলত মাসকালাই, চাল কুমড়া, জিরা, কালোজিরা, মৌরী দিয়ে তৈরি করা হয়। প্রতি কেজি বড়ি ২৫০-৩০০ টাকা (বড় আকারের) এবং ১০০-১৫০টাকা (ছোট আকারের) করে খুচরা-পাইকারি বিক্রয় করা হয়। নিজ এলাকার প্রয়োজন মিটিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, রংপুর, দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই বড়িগুলো সরবরাহ করা হয়।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া বিনতে তাবিব জানান, জেলার মধ্যে রাণীনগর উপজেলার একমাত্র খট্টেশ্বর গ্রামটিতেই অনেক বছর যাবৎ বাণিজ্যিকভাবে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই সুস্বাদু মাসকালাইয়ের কুমড়া বড়ি তৈরি করা হয়ে থাকে। অন্যান্য গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে এই বড়ি তৈরি করা হয় না। তবে সরকারিভাবে যদি এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের আর্থিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে এই শিল্পটি আরও অধিক প্রসারিত হতো। এখানকার কারিগররা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাহলে আমরা তাদেরকে সরকারিভাবে না হোক উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ যথাসাধ্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
সাহস২৪.কম/জুয়েনা/রিয়াজ