বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৬:০৪

সাহস ডেস্ক

১৯৭১ সালের এই দিনে (৫ সেপ্টেম্বর) যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন রণাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়।

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।যা বর্তমানে নূর মোহাম্মদনগর নামে পরিচিতি লাভ করেছে। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মার নাম জেন্নাতুন্নেছা। মতান্তরে জেন্নাতা খানম। বাল্যকালেই তিনি বাবা-মাকে হারান। লেখাপড়া করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (সাবেক ইপিআর, বর্তমানে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ-বিজিবি) যোগদান করেন। দিনাজপুর সীমান্তে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই বদলি হন যশোর সেক্টরে। পরবর্তীতে তিনি ল্যান্স নায়েক পদোন্নতি পান। মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে অংশগ্রহণ করে দেশ মাতৃকায় যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন নড়াইলের এ সাহসী সন্তান (নূর মোহাম্মদ)। এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্ণেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিলেন মেজর এস এ মঞ্জুর। এদের নেতৃত্বেও প্রাণ-পণ লড়েছেন নূর মোহাম্মদ। ৫ সেপ্টেম্বর পাকবাহিনীর গুলিতে নূর মোহাম্মদের সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হন।আহত সহযোদ্ধাকে কাঁধে নিয়েই এলএমজি হাতে শত্রু পক্ষের সাথে যুদ্ধ করেছেন। গুলি ছুঁড়েছেন। হঠাৎ করে পাকবাহিনীর মর্টারের আঘাতে নূর মোহাম্মদের হাঁটু ভেঙ্গে যায়। তবুও গুলি চালান।প্রিয় মাতৃভূুমিকে শক্রমুক্ত করার জন্য।জীবন প্রদীপ নেভার শেষ পর্যন্ত প্রাণপণ চেষ্টা শহীদ হন।

এ বীরের সম্মানার্থে নড়াইল শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ চত্বরে ৬২ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণ করা হয়েছে। ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরৗ এ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন করেন। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আজ সোমবার স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ, স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে কোরআন খানি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। আলোচনা সভায় জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফ, পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, বীর শ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া প্রমূখ উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া শার্শার কাশিপুরে অবস্থিত কবর জিয়ারতে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের পরিবারের সদস্যরা, বিজিবি দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিওয়নের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এবং নড়াইল জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা যাবেন বলে নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত