যুদ্ধটা মনে হচ্ছে সময়ের ব্যাপার

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০১৭, ১১:০৯

সাহস ডেস্ক

আমেরিকা এবং উত্তর কোরিয়ার মাঝে যুদ্ধটা মনে হচ্ছে সময়ের ব্যাপার এখন। উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জন উন দেশটির রাজধানী পিয়ং ইয়ং থেকে ৬ লাখ মানুষকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া চায়না দুই দিন আগেই জানিয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া এবং আমেরিকার মাঝে সংঘাত এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ ওই অঞ্চলে আমেরিকা ভারি সমরাস্ত্র নিয়ে মজুত করেছে!

আজ দেখা যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া বড় বড় ক্ষেপণাস্ত্র তাক করে রেখেছে এমন সব ছবি বিশ্ব মিডিয়া’য় খবর হয়েছে।

আমেরিকার পারমাণবিক বোমা আছে সে আমরা সবাই জানি। ধারণা করা হয় উত্তর কোরিয়ারও পারমাণবিক বোমা আছে। তবে এটি আর কেবল ধারণার মাঝে সীমাবদ্ধ নেই, মোটামুটি নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র আছে।

এর কারণ হচ্ছে রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া বন্ধু রাষ্ট্র। উত্তর কোরিয়া প্রায় সকল রকম যুদ্ধাস্ত্র রাশিয়া(ক্ষেত্র বিশেষে চায়না) থেকেই কেনে কিংবা প্রযুক্তি সুবিধা নিয়ে থাকে। এখন আমেরিকা এবং উত্তর কোরিয়ার মাঝে যদি সংঘাত সত্যি সত্যি’ই বেঁধে যায়, তাতে যে রাশিয়া এবং চায়নার স্বার্থে আঘাত লাগবে এটা স্বাভাবিক’ই। উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার একটা বড় বাজার।

এছাড়া এইতো কয়দিন আগেই আমেরিকা, সিরিয়ায় বলা নেই কওয়া নেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রাশিয়া ব্যাপারটা মোটেই পছন্দ করেনি। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ’কে সরানোর জন্য’ই আমেরিকা ওই হামলা চালিয়েছে বলে রাশিয়া মনে করছে। এদিকে আসাদ, রাশিয়ার মিত্র হিসেবেই পরিচিত।

এদিকে দুই দিন আগে আফগানিস্তানে আমেরিকা ‘মাদার অব অল বোম’ টাইপ কি যেন একটা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চাইয়েছে। এই বোমটিকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সব চাইতে বড় ও ভারি বোম। মানুষ কিংবা বাস্তব জগতে (লোকালয়ে) এর আগে এটি পরীক্ষা করা হয়নি। এবার’ই প্রথম।

ডোনল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসছে খুব বেশিদিন কিন্তু হয়নি। অথচ এর মাঝেই নিয়িমিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়ে গেছে দেশে দেশে। আমেরিকায় রিপাবলিকান পার্টি ক্ষমতায় আসা মানেই দেশে দেশে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়া!

জর্জ বুশ শুরু করেছিলো ইরাক যুদ্ধ দিয়ে। এরপর তার পুত্র বুশ জুনিয়র ক্ষমতায় এসে যুদ্ধের পরিমাণ আরও বাড়িয়েছিলো। মাঝখানে ডেমোক্রেট'রা যতদিন ক্ষমতায় ছিলো, ততদিন অন্তত সত্যিকারের যুদ্ধ বলতে যা বুঝায় এর পরিমাণ কিছুটা কমই ছিলো পৃথিবী জুড়ে।

এবার আবার ট্রাম্প এবং রিপাবলিকান পার্টি ক্ষমতায় এসছে। এখন দেখার পালা, আমেরিকা-উত্তর কোরিয়া যুদ্ধ বেঁধে যায় কিনা! যুদ্ধ যদি সত্যি’ই বেঁধে যায়, আমার ধারণা পৃথিবীকে এই যাত্রায় তৃতীয় মহাযুদ্ধ দেখতে হতে পারে। কারণ দেশ দুটি’ই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং এর সাথে অন্য অনেক দেশের স্বার্থ জড়িয়ে আছে।

পশ্চিমা গণমাধ্যম গুলো এখন যখন তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে, তখনো হয়তো আফ্রিকার কোন দেশে মা তার ছোট বাচ্চা’কে খাওয়াতে না পেরে মানুষের কাছে হাত পাতছে; কিংবা দক্ষিণ এশিয়ায় সন্তান হারা বৃদ্ধ মা চিন্তা করছে-শেষ বয়েসে আমাকে দেখার কি কেউ’ই নেই!

মানব সভ্যতা ধ্বংস করার জন্য দু-চারটা পারমাণবিক বোমা’ই যথেষ্ট। আমরা সভ্য মানুষরা কতো পরম যত্ন নিয়েই না সেই বোমা গুলো তৈরি করেছি। অথচ পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ অভুক্ত শিশু কিংবা বৃদ্ধ’দের দুই বেলা খাবার দেয়ার জন্য মানুষের প্রতি মানুষের মমতা এবং ভালোবাসাই যথেষ্ট ছিলো। সেই মমতা এবং ভালোবাসা আমরা সভ্য মানুষরা গড়ে তুলতে পারিনি। এরপরও আমরা নিজদের সভ্য হিসেবে দাবী করি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত