আকতার জাহান জলি আত্মহত্যা

“আম্মাকে তো আমার সামনে মারার চেষ্টা করেছো”

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১১:৫৬

সাহস ডেস্ক

অবশেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলির ‘আত্মহত্যা’ বিষয়ে মুখ খুললো তার ছেলে আয়মান সোয়াদ আহমেদ।

‘সুইসাইড নোট’ লিখে মায়ের আত্মহত্যার ১৭ দিন পর সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুকে ৯ম শ্রেণীর এ ছাত্র আবেগঘন পোস্ট দেয়। 

এতে সোয়াদ সুইসাইড নোটে মায়ের লিখে যাওয়া কথার সত্যতা নিশ্চিত করে নিজের গলায় বাবা সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদের ছুরি ধরার কথা উল্লেখ করেছে। ফলে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকায় নানা বাড়িতে অবস্থান করা সোয়াদ ঘটনার পর থেকে চুপ ছিল। তবে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার পর যারা এতদিন তানভীর আহমদের পক্ষ নিয়েছিলেন, তারাও নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ঘটনার জন্য তাকে দায়ী করে ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 
নিচে সোয়াদের লেখাটা হুবহু তুলে দেওয়া হলো।


“অনেকদিন ধরেই আমার কাছে ওই ‘গলায় ছুড়ি’ ধরার ঘটনাটা জানতে চাওয়া হচ্ছে। আজকেই বলেই দেই, কি ঘটেছিল ওই দিন।

আম্মা আর আমি বাইরে যেতে চাইসিলাম আমার এক বান্ধবীর বাসায় (বান্ধবীর নাম মেনশন করলাম না)। সারাদিন প্ল্যানিং করার পর আমি আব্বার কাছে অনুমতি চাইতে গেসিলাম। অনুমতি চাওয়ার সময় আব্বা বলে ‘তোমার আম্মাকে বলো ওর মত চলে যেতে। আমি তোমাকে দিয়ে আসবো’। আমি বললাম ‘আজব তো। আমি আর মা এই জিনিস প্ল্যান করসি। তুমি কেন interfere করতেসো?’ আব্বা বলল ‘বাপ হিসেবে আমার এই অধিকার আছে’। আমি বললাম ‘কিন্তু আম্মার সাথে প্ল্যান নষ্ট করার অধিকারও তোমার না ‘। আব্বা বলে ‘main thing is....তোমাকে ওই মহিলার সাথে যেতে দিব না। গেলে আমার সাথে যাবা, নাহলে নাই’। আমি বলি ‘কি এমন করসে যে এত ক্ষতিকর মনে করো আম্মাকে? হ্যা?’ আব্বা কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে যায়ে। পরে বাধ্য হয়ে আম্মাকে ফোন দিয়ে বলি যে আমি যেতে পারব না আজকে। মা বলে ‘আমি বুঝছি কি হয়েছে। চিন্তা করিস না বাবা। আর কয়েকটা দিন’। পরে সন্ধ্যা বেলায় আব্বাকে বলি ‘প্ল্যানটা নষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ’ তখনি আব্বা বলে উঠে ‘তুই কি ঝগড়া লাগাইতে চাস? তোর আম্মার মত হয়েছিস’। আমি বলি ‘আমার আম্মার নামে এইসব কথা বলবা না। খবরদার!’ আব্বা বলে ‘তোর মায়ের সাথে কথা বন্ধ কর, এই কথাগুলাও বন্ধ হয়ে যাবে।’ আমি বলি ‘বন্ধ করবো না!’ আব্বা তখনি রান্নাঘরে গিয়ে একটা বড় চাকু নিয়ে এসে আমার গলায় ধরে বলে ‘কি বললি? শুনতে পাইনি’ বললাম অল্প শুরে ‘বন্ধ করবো না। মেরে ফেলতে চাইলে মারো। আম্মাকে তো আমার সামনে মারার চেষ্টা করেছো। সিউরলি এটাও পারবে।’ আব্বা চাকুটা ছুড়ে মাটিতে ফেলে দিলো। কিছু না বলে চলে যায়ে ঘরে.....”

সোয়াদের লেখার পরেই নতুন করে তানভীরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবীতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও এই লেখা পাঠ করে তানভীরকে বিকৃত মস্তিষ্কের খুনি বলে মন্তব্য করেন ও তার বিচার দাবি করেন। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত