সূরা আল ইমরানের ফজিলত

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০১৭, ১৪:১২

সাহস ডেস্ক

সূরা আল ইমরান। কুরআনের ৩ নম্বর সূরা, যা মদিনায় অবতীর্ণ। এই সূরাটি বড় সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত। এতে ২০০টি আয়াত আছে।

নামকরণঃ এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরা আল ইমরান হিসেবে। যেহেতু এ সূরার মাঝে হজরত ইমরান আঃ ও তাঁর বংশধরদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে, তাই সেদিকে লক্ষ করে এই নামকরণ করা হয়েছে। এ সূরায় মানবজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

প্রথমত, আকিদাগত দিক নিয়ে এবং আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদ ও তার প্রমাণাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ মানুষ এ সূরা পাঠ করে মূল আকিদা ও আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিতে পারবে এবং নিজেও এর ওপর অটল থাকতে পারবে, তা ছাড়া কুরআন যে সত্য তা প্রমাণ করা ও ইহুদিদের সন্দেহকেও দূর করা হয়েছে।

আকিদা বা বিশ্বাস যেহেতু মানব জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাই এ সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হলোঃ

আকিদা শব্দের অর্থ হলো­ বিশ্বাস যার অপর নাম ঈমান। আর যার মাঝে ঈমান নামক মহামূল্যবান সম্পদ বিদ্যমান, তাকে বলা হয় মুমিন। আকিদা হলো শিকড় বা মূল। আমাদের আমল তথা ইবাদত-বন্দেগি কবুল হওয়া-না-হওয়া এই আকিদার ওপর নির্ভরশীল, কারণ যার আকিদা বিশ্বাসে কোনো ত্রুটি আছে, সে মুমিন নয়। আর মুমিন মুসলমান ছাড়া আল্লাহ তায়ালা অন্য কারো ইবাদত কবুল করেন না।

এ জন্য প্রথমে আমাদের আকিদা তথা ঈমানকে স্বচ্ছ করে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, ঈমানহীন সারা জীবনের কোনো আমলই কাজে আসবে না। আর স্বচ্ছ আকিদা তথা পূর্ণ ঈমান থাকা অবস্থায় সামান্য আমলও নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে।

দ্বিতীয়ত, এ সূরার আলোচনায় শরিয়তের বিষয়াবলি বিশেষ করে যেসব মাসায়িল বা বিধিবিধান জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ-এর সাথে সম্পৃক্ত, সেগুলো স্থান পেয়েছে এবং ঈসা আঃ ও মারইয়াম আঃ সম্পর্কে ইহুদি-নাসারারা যেসব সন্দেহ পোষণ করে, সেগুলোকেও স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে তার সমাধান দেয়া হয়েছে। মোট কথাঃ এ সূরা আলোচ্য বিষয়ের বৈশিষ্ট্যের কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাবান এবং অন্যান্য সূরা থেকে ব্যতিক্রম। তাই এ সূরা বেশি বেশি পাঠ করা ও তার বিষয়াবলির মধ্য থেকে যা আবশ্যক তা নিজের মাঝে বাস্তবায়ন করা জরুরি।

সূরা আল ইমরানের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে হজরত আবু উমামা রাঃ হতে বর্ণিত তিনি বলেন, তোমরা সূরা বাকারা ও সূরা আল ইমরান পাঠ করো। কেননা তা কিয়ামের দিন কুরআন পাঠকারীর জন্য সুপারিশকারী হবে এবং এই উভয় সূরা কিয়ামতের দিন দু’টি মেঘমালা বা দু’টি ছায়া অথবা দু’টি সারিবদ্ধ পাখির ঝাঁকরূপে আগমন করবে এবং পাঠকারীর পক্ষে বিতর্ক করবে। 

হজরত নাওয়াস ইবনে সামআন রাঃ হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি সূরা বাকারা ও সূরা আল ইমরান সম্পর্কে রাসূল সাঃ-কে বলতে শুনেছি; তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন কুরআন ও কুরআনের ওই সব আহালকে নিয়ে আসা হবে, যারা তার ওপর আমল করবে। আর তাদেরকে অগ্রসর করাবে। সূরা বাকারা ও সূরা আল ইমরান। অর্থাৎ এ সূরা পাঠকারীর মর্যাদা প্রদান করা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করার জন্য তাদেরকে সামনের দিকে অগ্রসর করানো হবে।

মূলত সূরা আল ইমরান একটি জ্ঞানগর্ভ সূরা, যার মাঝে ঈমান আমল জিহাদসহ বহুবিধ মাসয়ালা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং এই সূরা অত্যন্ত বরকতময় ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত