আজ বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০১৮, ১১:২২

মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী। তিথি মেনে আজ বাঙালির ঘরে ঘরে বিদ্যার দেবীর আরাধনা। ব্রহ্মার মানসকন্যা সরস্বতী৷ এক হাতে তাঁর বীণা, অন্যহাতে পুস্তক। তাই পুস্তকের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক সকলেই আজ ব্যস্ত তাঁর আরাধনায়। বিদ্যার্জন সহজ না হলেও দেবী কিন্তু অল্পেই সন্তুষ্ট। সামান্য ফুল-মিষ্টি-বেলপাতা আর দোয়াত-কলম।

তবে পুজো মানেই এখন জিনিসপত্রের বাজার অগ্নিমূল্য। গত কয়েকদিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ফুল-ফল। আপেল, বেদানা থেকে শুরু করে পেয়ারা, কুল ও অন্যান্য ফলের দামও আজ অনেক বেশি। শাক-সবজির দামেও আগুন। তারপরও ভোরবেলা থেকেই বাড়িতে বাড়িত শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর তোড়জোর। চলছে শাঁখ, উলুধ্বনিও । আজ আবার শিশুদের হাতে খড়িরও দিন।  চলছে পুষ্পাঞ্জলি, ফলপ্রসাদ ও ভোগ বিতরণ।

মন্ত্রতন্ত্র, নিয়মকাননুও তেমন কিছু নয়। সরস্বতী কিন্তু কল্যাবিদ্যারও দেবী। তাই শিল্প সাধনা যাঁরা করেন, তাঁরাও আজ পুজায় ব্যস্ত। বাগদেবী শ্বেতশুভ্র। কিন্তু বাঙালি তাকে নিজের মনের রঙ মিশিয়ে বসন্তের শুরুতে করেছে বাসন্তী বর্ণা। তাঁর সঙ্গে রঙ মিলিয়ে সাজেন পূজারীণিরাও। যদিও তাদের অনেকের কাছেই আজ পুজা উপলক্ষ মাত্র। বরং লক্ষ্যভেদ করার উপযুক্ত তিথি। বাসন্তী শাড়িতে সেজে তাই আজ পথে পথে শরসন্ধানের আয়োজন।

শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পুজো করা হয় সাধারণ আচারাদি মেনেই। তবে এই পুজোয় বেশ কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। যেমন অভ্র-আবির, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম, যবের শিষ, বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল। লোকাচার অনুসারে ছাত্রছাত্রীরা পূজার আগে কুল ভক্ষণ করে না। পুজোর শেষে হয় পুষ্পাঞ্জলি। পরদিন সকালে ফের একবার পুজোর পর চিড়ে ও দই মেশানো দধিকর্মা ঠাকুরকে নিবেদন করে পুজো শেষ হয়। কোনও কোনও পরিবারে এদিন অরন্ধন পালন ও ‘গোটা-সেদ্ধ’ খাওয়ার প্রথাও রয়েছে।

তাছাড়া, সরস্বতী পুজো বাঙালির নিজস্ব ভ্যালেন্টাইন ডে । সমগ্র বাঙালি কূল এই দিনটাকেই প্রেমের দিন হিসেবে পালন করে থাকে। তাই এইদিন স্কুল-কলেজে অন্য ধরনের এক উন্মাদনাও চোখে পড়ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত