রোজা ভঙ্গের কারণ

প্রকাশ | ২১ মে ২০১৮, ১২:০৪

অনলাইন ডেস্ক

যা কিছু রোজা ভঙ্গ করে তা থেকে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিরত থাকার নাম হলো সিয়াম। রোজাভঙ্গকারী সব ধরনের বিষয় থেকে বিরত না থাকলে রোজা আদায় হবে না। যে সব কাজ রোজা ভঙ্গ করে তা সাধারণত সাত প্রকার।

০১. সহবাস: রোজা অবস্থায় সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায়। রোজা ফরজ হোক কিংবা নফল। সহবাসের মাধ্যমে রোজা বাতিল করা হলে তার কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করা জরুরি।

০২. ইচ্ছাকরে বীর্যপাত করা: যেমন কাউকে চুমা দেওয়ার মাধ্যমে বা স্পর্শ করার কারণে কিংবা হস্তমৈথুন ইত্যাদি কারণে বীর্যপাত ঘটানো হলে। এ সব কারণে রোজা বাতিল হয়ে যায়। তবে এ সব কারণে কামভাব থাকা সত্ত্বেও যদি বীর্যপাত না হয় তবে রোজা বাতিল হবে না। ইসলামী শরিয়তের একটা মূলনীতি হলো যা কিছু অন্যায় বা হারাম কাজের দিকে নিয়ে যায় বা তার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে তা থেকে দূরে থাকা ওয়াজিব। এ কারণে রোজা পালনকারীর জন্য কুলি করা, নাকে পানি দেয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। স্বপ্নদোষের কারণে বীর্যপাত হলে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। 

০৩. পানাহার করা: আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন: ‘আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাতের কালো রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। অতঃপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর।’ 

নাক দিয়ে ওষুধ সেবন করা পানাহার করার মতোই সিয়াম বাতিল করে দেয়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘তোমরা ওজুর সময় নাকে পানি দিতে একটু অতিরিক্ত করবে তবে সিয়াম অবস্থায় নয়।’ বর্ণনায়: আবু দাউদ

এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হলো সিয়াম অবস্থায় নাকের ভিতরে এমনভাবে পানি দিতে নিষেধ করা হয়েছে যাতে পানি ভিতরে চলে যায়। অতএব নাক দিয়ে কিছু ভিতরে প্রবেশ করালে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।

০৪. যা কিছু পানাহারের বিকল্প, তা রোজা ভঙ্গ করে এটা দু’ভাবে হতে পারে: 
(১) রোজা পালনকারী শরীরে রক্ত গ্রহণ করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। কারণ পানাহার দ্বারা রক্ত তৈরি হয়। তাই রক্তগ্রহণ পানাহারের একটি বিকল্প।

(২) খাবারের বিকল্প হিসেবে স্যালাইন বা ইনজেকশন গ্রহণ করা। তবে যে সকল ইনজেকশন ও স্যালাইন খাবারের বিকল্প নয় তা গ্রহণ করতে বাধা নেই।

০৫. হাজামা বা শিঙ্গা লাগানো: যে শিঙ্গা লাগায় ও যাকে শিঙ্গা লাগানো হয় উভয়ের সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। যেমন হাদিসে এসেছে, ‘শিঙ্গা যে লাগাল ও যাকে লাগানো হলো উভয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল।’ (আহমদ)
শিঙ্গা লাগালে শরীরে এর প্রভাব পড়ে। তাই সিয়াম পালনকারীর জন্য শিঙ্গা ব্যবহার জায়েজ নয়। তবে প্রয়োজন হলে সিয়াম ভঙ্গ করে শিঙ্গা ব্যবহার করবে পরে সিয়াম কাজা করবে। নাক দিয়ে রক্ত পড়লে কিংবা দাঁত ওঠালে অথবা আহত হয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে সিয়ামের কোনো ক্ষতি হয় না।

০৬. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা: যদি কেউ ইচ্ছা করে বমি করে তবে তার সিয়াম পালন বাতিল হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার বমি হল তার কোনো ক্ষতি নেই। আর যে নিজের ইচ্ছায় বমি করল সে রোজা কাজা করবে।’ (মুসলিম)। তবে বমি আসলে তা আটকে রাখার চেষ্টা করবে না।

০৭. মহিলাদের মাসিক ও প্রসূতিবস্থা আরম্ভ হলে: যদি সিয়াম অবস্থায় মাসিকের রক্ত দেখা দেয় তবে সিয়াম ভেঙে যাবে। এমনিভাবে প্রসবজনিত রক্ত প্রবাহিত হতে থাকলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।