টি-২০ সিরিজও খোয়ালো টাইগাররা

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:১১

সাহস ডেস্ক

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে ১৯৫ রান সংগ্রহ করেছে নিউজিল্যান্ড। জবাবে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। এক ম্যাচ হাতে রেখেই  সিরিজ নিশ্চিত করলো ব্ল্যাক ক্যাপসরা।

এর আগে মানরো-ব্রুসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে সাত উইকেটে ১৯৫ রান তোলে কিউইরা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম টি-২০ সেঞ্চুরি  তুলে নেন কলিন মানরো।

মানরোর পাশাপাশি ব্যাট হাতে আলো ছড়ান আগের ম্যাচে অভিষিক্ত টম ব্রুস। ৩৯ বলে ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। দলীয় ৪৬ রানে তিন  উইকেট হারানোর পর এ দু’জনের ১২৩ রানের জুটিতে বড় স্কোরের ভিত পায় স্বাগতিকরা।

ব্যাট হাতে ঝড় তোলা মানরো (১০১) ৫২ বলে সমান ৭টি চার ও ৭টি ছক্কায় শতক পূর্ণ করেন। ১৭তম ওভারে তাকে নুরুল হাসানের গ্লাভসবন্দি করে স্বস্তি এনে দেন  রুবেল হোসেন।

একই ওভারে আগের ম্যাচে অপরাজিত ঝড়ো ইনিংস (২২ বলে ৪১) খেলা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের (২) স্ট্যাম্প ভাঙেন। আর শেষ ওভারে জেমস নিশামকে (৫) নিজের  তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন রুবেল। এছাড়াও মিচেল স্যান্টনারকে (৪) রানআউট করে কিউইদের সপ্তম উইকেটের পতন ঘটান তিনি।

শুক্রবারের (৬ জানুয়ারি) ম্যাচটিতে মাউন্ট মাউনগানুইয়ের বে ওভালে টস জিতে উইলিয়ামসনদের ব্যাটিংয়ে পাঠান মাশরাফি। নেপিয়ারে অনুষ্ঠিত প্রথম টি-টোয়েন্টিতে  (৩ জানুয়ারি) ছয় উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে লিড নেয় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ওয়ানডে সিরিজ হারের পর এ ফরমেটে টিকে থাকার লড়াইয়ে জয় ভিন্ন কিছুই ভাবছে  না টাইগাররা।

ইনিংসের প্রথম বলেই লুক রনকিকে (০) ফিরিয়ে দলকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন মাশরাফি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে ধরা পড়েন কিউই  উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। কিন্তু, রানের চাকা সচল রাখেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও কলিন মানরো।

পঞ্চাম ওভারে বিপদজনক হয়ে ওঠা দু’জনের ৪২ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। লং-অফে তামিম ইকবালের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন উইলিয়ামসন  (১২)। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে (ষষ্ঠ) কোরি অ্যান্ডারসনকে (৪) ক্লিন বোল্ড করে সতীর্থদের উদযাপনের মধ্যমণি হন মোসাদ্দেক।

বাংলাদেশের হয়ে ৩৭ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট লাভ করেন রুবেল হোসেন। একটি করে নেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান ও মোসাদ্দেক  হোসেন। উইকেটশূন্য থাকেন মোস্তাফিজুর রহমান। 

প্রায় দুইশ রান তাড়ায় প্রয়োজন ছিল দারুণ সূচনা। বাংলাদেশ শুরুটা হয়েছে উল্টো। আগের ম্যাচের মতোই বাজে শটে ফিরেছেন ইমরুল কায়েস। নামের পাশে এবারও  শূন্য।
ইমরুলকে হার বানানো বাজে শটে আউট সাকিব আল হাসান। মাঝে রান আউট তামিম ইকবাল। ৩৬ রানে নেই তিন সিনিয়র ব্যাটসম্যান, মাচ তো এক রকম ওখানেই  শেষ! সাব্বির ও সৌম্যর দারুণ ব্যাটিংয়ে তবু জিইয়ে ছিল বাংলাদেশের আশা। সৌম্যকে নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের ধৈর্য্যের অবশেষে কিছুটা ফল এসেছে। সাব্বির  খেলেছেন নিজের মতোই। দুজনই খেলেছেন চোখধাঁধানো কিছু শট।

তবে ম্যাচ জিততে প্রয়োজন ছিল স্রেফ কিছু শটের চেয়েও বেশি কিছু। নিজের সেরা সময়কে মনে করিয়ে দেওয়া কিছু শট খেলে সৌম্য ফিরেছেন ২৬ বলে ৩৯ রানে।  ৪০ বলে ৬৮ রানের জুটি ভাঙার পর আর দাঁড়াতে পারেননি কেউ।

সাব্বিরের বিদায়ের পর তো আবারও হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ব্যাটিং। ৩২ বলে ৪৮ করে সাব্বির ফিরেছেন ছক্কার চেষ্টায়। বাংলাদেশ শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে ৩০  রানে।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন, নুরুল হাসান  (উইকেটরক্ষক), মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান।

নিউজিল্যান্ড একাদশ: কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), কলিন মানরো, কোরি অ্যান্ডারসন, জেমস নিশাম, টম ব্রুস, লুক রনকি (উইকেটরক্ষক), কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম,  মিচেল স্যান্টনার, বেন হুইলার, ইশ শোধি, ট্রেন্ট বোল্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৫/৭ (রনকি ০, উইলিয়ামসন ১২, মানরো ১০১, অ্যান্ডারসন ৪, ব্রুস ৫৯*, ডি গ্র্যান্ডহোম ২, নিশাম ৫, স্যান্টনার ৪, হুইলার ০*;  মাশরাফি ১/৩২, রুবেল ৩/৩৭, মুস্তাফিজ ০/৩০, সাকিব ১/৩২, মোসাদ্দেক ১/২২, রিয়াদ ০/৩২)

বাংলাদেশ: ১৮.১ ওভারে ১৪৮ (তামিম ১৩, ইমরুল ০, সাব্বির ৪৮, সাকিব ১, সৌম্য ৩৯, মাহমুদউল্লাহ ১৯, মোসাদ্দেক ১, নুরুল ১০, মাশরাফি ১, রুবেল ১,  মুস্তাফিজ ০*; স্যান্টনার ১/১৪, বোল্ট ১/২৮, হুইলার ২/১৬, ডি গ্র্যান্ডহোম ০/৩৩, সোধি ৩/৩৬, উইলিয়ামসন ২/১৬)

 

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৪৭ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ২-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কলিন মানরো

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত