ইতিহাস গড়ে কোয়ার্টারে বার্সেলোনা ( ভিডিও)

প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০১৭, ১৩:৫২

সাহস ডেস্ক

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইতিহাস গড়ে পিএসজিকে উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে বার্সেলোনা। 

৮ মার্চ (বুধবার) রাতে ন্যূ ক্যাম্পে পিএসজিকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছেন মেসি-নেইমাররা। এর আগে প্রথম লেগে পিএসজির মাঠ থেকে ৪-০ গোলে হেরেছিল লুইস এনরিকের দল।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের ইতিহাস বলছিল, প্রথম লেগে চার গোলে হেরে পরের রাউন্ডে যাওয়ার ইতিহাস নেই। ম্যাচের সময় বলে দিচ্ছিল প্রায় ২০ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে ছিটকে পড়তে যাচ্ছে বার্সেলোনা। 

প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের উৎসব রাঙাতে ডাগ আউটে খেলোয়াড়রাও প্রস্তুত। একটুপর বার্সাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ন্যু ক্যাম্পে উৎসবে মাতবেন তারা। কিন্তু এটা যে বার্সেলোনা। অসম্ভবকে সম্ভব করার এক নজির গড়ে তাই পিএসজিকে উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে লুইস এনরিকের দল।

ঘরের মাঠে ঐতিহাসিক এ জয়ের ম্যাচে বার্সেলোনার শুরুটা হয়েছিল ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’-প্রবাদের মতই। খেলার তৃতীয় মিনিটে সুয়ারেসের চমৎকার হেডে বল যায় গোলপোস্টে। সেটি পা দিয়ে ফেরান মুনিয়ে। কিন্তু গোল লাইন প্রযুক্তিতে দেখা যায়, বল গোললাইন পেরিয়েছে।
এই জয়ের কৃতিত্ব অবশ্য কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে যাচ্ছে না। বরং বলতে হবে দলীয়ভাবে চমৎকার কম্বিনেশনের মাধ্যমে দুর্দান্ত জয়টি অর্জন করে নিয়েছে লা লিগার দলটি।

ম্যাচ শুরুর পর ৩ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলটি করেন সুয়ারেজ। ডি বক্সে ভিতরে ক্রস থেকে পাওয়া বল থেকে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে গোলটি করেন এই উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড। এরপর বার্সেলোনাকে একটি আত্মঘাতী গোল উপহার দেন ডিফেন্ডার লেভিন কুর জাওয়া। ফলে ২-০ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধ। এটি মোটেও আশাব্যঞ্জক কিছু ছিল না বার্সা সমর্থকদের জন্য।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সফল স্পটকিকে দলকে স্বপ্ন ছোঁয়ার আরেকধাপ কাছে নিয়ে যান মেসি। লেইভিন নিজেদের ডি-বক্সে নেইমারকে ফেলে দিলে পেনাল্টিটি পায় বার্সেলোনা। তবে এর ১০ মিনিট পরেই ক্যাম্প ন্যূকে স্তব্ধ করে দেন কাভানি। ডি-বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শটে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-৩। অতিথিরা মূল্যবান অ্যাওয়ে গোলও পেয়ে যাওয়ায় বার্সেলোনার শেষ আটে ওঠার আশা একরকম শেষ হয়ে যায়।

শেষ দিকে দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে নতুন করে আশা জাগান নেইমার। ৮৮তম মিনিটে বাঁ-দিক থেকে চমৎকার বাঁকানো ফ্রি-কিকে লক্ষভেদের পর সফল স্পটকিকে স্কোরলাইন ৫-৫ করেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। আর পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে নেইমারের উঁচু করে বাড়ানো বল জালে ঠেলে দেন বদলি নামা রবের্তো।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এর আগে নকআউট পর্বে প্রথম লেগের চার গোলের ঘাটতি দ্বিতীয় লেগে পুষিয়ে নেওয়ার উদাহরণ ছিল না। অনন্য সেই দৃষ্টান্তই গড়লো বিশ্বসেরা আক্রমণভাগের দল বার্সেলোনা। 

বুধবার সবাই যেন অপেক্ষা করে ছিল বার্সেলোনার হার দেখার জন্য। কেননা হিসেবটা ছিল বেশ সহজ। জয়ের জন্য বার্সেলোনাকে করতে হবে ৫ গোল। অন্যদিকে পিএসজির জয়ের জন্য দরকার বার্সেলোনাকে ৪টির কম গোল করতে দেয়া। বার্সা পাঁচ গোল করলেও তার পরিবর্তে মাত্র একটি গোলে জয় নিশ্চিত হয়ে যেত পিএসজির। কিন্তু এই সহজ সমীকরণ যে কাতালানদের মাঠে খাটে না, তা আরো একবার প্রমাণ করে দিল বার্সেলোনা। তাই ম্যাচের শেষ সময়ে নেইমারের গোলে বার্সেলোনা যখন ৫-১ গোলে এগিয়ে আছে, তখনো হতাশা ছিল দর্শকদের মধ্যে। কিন্তু অতিরিক্ত ৫ মিনিটে রবার্তো কার্নিসারের গোলে সৃষ্টি হল নতুন এক ইতিহাস। প্রথম লেগে ৪-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও কোন দল চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে নতুন রেকর্ড গড়ল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত