চট্টগ্রাম টু বিশাখানত্তম : ১২ দিন পর উদ্ধার যুবক !

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৬, ১১:২০

সাহস ডেস্ক

দীর্ঘ ১২ দিন অনাহারেই কন্টেইনারের ভেতর কাটলো এই যুবক। শুধু তাই নয়, সেই কন্টেইনারে করেই ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখানত্তনম বন্দরে পৌঁছে যায় সে। রোহান হোসেন নামের ওই যুবক ১২দিন আগে চট্টগ্রাম বন্দরে খালি কন্টেইনারে ঢুকেছিলেন। তার বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে।

কন্টেনারের ভিতর এক বাংলাদেশি যুবক। তাকে উদ্ধার করা হল । ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, কন্টেনারটি দিন দশ-বারো আগে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে তোলা হয়েছিল। 

এতদিন কী করে জাহাজের নাবিকদের চোখ এড়িয়ে গেল তা নিয়ে ধোঁয়াশা ও চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। উদ্ধারের পর ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) কন্টেইনারের ভেতর থেকে মানুষের গলার আওয়াজ শোনা যায়। সেই আওয়াজ নিরাপত্তারক্ষীদের কানে গেলে তারপরেই কন্টেনার খুলে কাহিল অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করা হয়। টানা ১২ দিন না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ওই যুবক। বর্তমানে সে ভারতীয় পুলিশের তত্ত্বাবধানে বিশাখাপত্তমের কিং জর্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ অন্ধ্রপ্রদেশের তেলেগু ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল টিভি নাইন ও এনটিভিতে রোহানের সাক্ষাৎকারও সম্প্রচার হয়েছে। 

বিশাখাপত্তমের পুলিশদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সে খালি কন্টেইনারে ঢুকে পড়ে বলে জানিয়েছে। সুস্থ হলে তাকে বাড়ি পাঠানো হবে।

এনটিভিতে তাকে হিন্দিতে বলতে শোনা যায়, “কন্টেইনার মে আটকা পর যায়ে গা। বারা (১২) দিন পর কন্টেইনার সে বের হইছি আজকে। ঢাকা মে এসি টেকনিশিয়ান।”

টিভিনাইনকে রোহান বলেন, কোনো এক ব্যক্তি তাকে কন্টেইনারে উঠে শুয়ে পড়তে বলেন। কারণ তা না হলে গাড়ি (কন্টেইনার ওঠা-নামা করানোর যন্ত্র) ধাক্কা দিলে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাবে। কন্টেইনারে উঠে ঘুমিয়ে যেতে বলে। আরও বলে, ১০-১২ দিন পর টার্মিনাল থেকে বের হওয়া যাবে।

ওই খালি কন্টেইনারটি বিশাখাপত্তমভিত্তিক সামসারা শিপিং লিমিটেডের নামে আনা হয়েছিল বলে ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দু’র প্রতিবেদনে বলা হয়।

বিশাখাপত্তম পুলিশের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বন্দরের বিশাখা কন্টেইনার প্রাইভেট লিমিটেডের (ভিসিটিপিএল) কর্মকর্তারা কন্টেইনারে ভিতরে রোহান হোসেনের সন্ধান পান।

পরে পুলিশ এসে কন্টেইনার খুলে রোহানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন।

চট্টগ্রাম থেকে বিশাখাপত্তনম পর্যন্ত দীর্ঘ যাত্রায় কন্টেনারের মধ্যে সে কী করে বেঁচে ছিল সেটাই অবাক কাণ্ড। জানা গিয়েছে ওই কন্টেইনারটি বিশাখাপত্তনম বন্দরে পৌঁছায় ৪-৫ দিন আগে। সেটিকে ইয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। 

তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে দ্রুত। এ বিষয়ে নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত