আইএসের যৌনদাসী কিশোরীর লোমহর্ষক কাহিনী

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০১৭, ১২:৪৮

সাহস ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) তাণ্ডব শুরু হয়েছে সময়টা ২০১৪ সাল। আর তখনই তাদের হামলার শিকার হন ইয়াজিদি জনগোষ্ঠীর। নির্বিচারে হত্যা করা হয় ইয়াজিদি পুরুষদের। অপহরণ করা হয় গোষ্ঠীটির হাজার হাজার নারী ও শিশু।

অপহৃতদের মধ্যে একজন হলো কিশোরী এখলাস। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। অপহরণের পর তাকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছয় মাস ধরে আইএস জঙ্গিদের ডেরায় আটক ছিল সে। পরে সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় এখলাস। 

এখলাসের সে সময়ের বীভৎস দিনগুলো বয়ান করলো এভাবে যে। 

যেদিন এখলাসকে অপহরণ করা হয়, সেদিন আরো দেড়শ নারীকে তুলে নিয়ে যায় আইএস। এক জঙ্গি তাকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করত। ওই জঙ্গির পাশবিক নির্যাতনের কথা জানাতে গিয়ে এখলাস বলে, ছয় মাস ধরে প্রতিদিন সে আমাকে ধর্ষণ করত। একপর্যায়ে আমি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলাম।

‘সে দেখতে খুবই কুৎসিত ছিল। একেবারে পশুর মতো। তার মাথায় লম্বা চুল ছিল। তার শরীরের দুর্গন্ধ ছিল বিকট। আমি ভয়ে তার দিকে তাকানোর সাহস পেতাম না।’

অনেক চেষ্টা করেও পালাতে পারছিল না এখলাস। কারণ, তার কাছে পালানোর জন্য কোনো গাড়ি ছিল না। আর পালাতে গিয়ে ধরা পড়লে তো রক্ষা নেই। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই সেই সুযোগ এলো। এখলাসের ওপর নির্যাতনকারী ওই জঙ্গি অন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিল। তখনই সবার অনুপস্থিতিতে নিজেকে মুক্ত করে এখলাস। 

নিজের জীবনের গল্প বলতে বলতে উদাস হয়ে পড়ে কিশোরী এখলাস। যেন এখনও পুরোনো স্মৃতিগুলো তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তার গালের প্রতিটি ভাঁজে স্পষ্ট হয়ে ওঠে কষ্টের চিহ্ন। কিন্তু চোখে কোনো পানি ছিল না। 

এখলাস বলে, জানেন, আমি এসব বলছি, তাও আমার চোখে পানি আসছে না কেন? কারণ আমার চোখের পানি তো শেষ হয়ে গেছে।

সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে নিজের স্বপ্নের কথা জানায় এখলাস। সে জানায়, পড়ালেখা করে আইনজীবী হতে চায়। 

এখলাস বর্তমানে জার্মানির একটি মানসিক হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে চিকিৎসার পাশাপাশি পড়াশোনাও করছে সে। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত