ক্লিনিকে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে ৮৪ রোগীকে হত্যা

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৪৭

সাহস ডেস্ক

জার্মানির উত্তরাঞ্চলে দুই রোগীকে খুন করার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত এক নার্স আরো অন্তত ৮৪টি খুনের জন্য দায়ী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই ব্যক্তি যেখানে কাজ করতেন সেই ক্লিনিকে যারা মারা গেছেন তাদের স্বজনরা এ বিষয়ে আরো তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ, খবর বিবিসির।

জার্মানির আইন অনুযায়ী প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম শুধু নিলস এইচ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। খুনের চেষ্টার দায়ে ২০০৬ সালে এবং খুনের দায়ে ২০১৫ সালে সে অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছে।

ক্লিনিকের যে ইউনিটে সে কাজ করতো সেখানে তার শিকারদের দেহে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করতো নিলস। এতে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে বা শরীরে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে রোগীরা মারা যেত।   

তার অপরাধের বিস্তৃতি জানতে ২০১৪ সালে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, এই তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানের ফলাফল তাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির সবচেয়ে ভয়ঙ্কর খুনি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। 

২০১৫ সালে তার বিচার চলার সময় দেমেনহস্ট শহরের ওই ক্লিনিকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে প্রায় ৯০ জন রোগীর ওপর ওই ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করার কথা স্বীকার করেছিল সে।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০০০ সালে ওল্ডেনবার্গের আরেকটি ক্লিনিকে কাজ করার সময়ও সে একই কাজ করেছে।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, ২০০১ সালে ওল্ডেনবার্গের ওই ক্লিনিকের কর্মীরা মৃতের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া ও মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া নিয়ে বৈঠক করেছিলেন, কিন্তু ওই ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। এতে নিলস ওল্ডেনবার্গের ক্লিনিক ছেড়ে দেমেনহস্টের ক্লিনিকে চলে যাওয়ার সুযোগ পান।

এসব ঘটনা তদন্ত করে দেখার জন্য ২০১৪ সালে পুলিশের একটি বিশেষ কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন শত শত মেডিকেল রেকর্ড পরীক্ষা করে ও কবর থেকে ১৩৪টি লাশের অবশেষ তুলে এনে তাতে অষুধের মাত্রা শনাক্ত করা চেষ্টা করে; কিন্তু অনেক রোগীর মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলায় তদন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।

তদন্তে যা উঠে এসেছে তা যেকোনো কল্পনাকেও হার মানাবে। ঠিক কতোজন হত্যা করা হয়েছে তা বলা একেবারেই সম্ভব হবে না, বলেন ওল্ডেনবার্গ পুলিশ প্রধান যোহান ‍কুম।

হত্যার শিকার হওয়ার ব্যক্তির সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের শুরুর দিকে নিলসের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত