সোনারগাঁওয়ে লিচুর বাম্পার ফলন আশার আলো চাষিদের চোখে

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২২, ২২:০১

সাহস ডেস্ক

গত দুই বছর করোনাভাইরাস থাকার কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার লিচুর ফলন হলেও বিক্রি করে তেমন লাভবান হতে পারেননি বাগান মালিকেরা। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে লিচুর ফলন। মান ভালো হওয়ায় এবার আশার আলো দেখছেন চাষিরা।

স্থানীয়রা জানান, লিচু ফল সুস্বাদু বিধায় এক সময় সোনারগাঁয়ে প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড় ও পতিত জমিতে শখের বসে লিচু গাছ লাগাতেন মানুষ। সেই লিচু পাকলে তারা নিজেরা খেতেন ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পাঠাতেন বাকিগুলো পশুপাখিরা খেতো। এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল হওয়ার কারণে লিচুর চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।

সোনারগাঁয়ে তিন জাতের লিচু উৎপাদন হয়। (কদমি) চায়না থ্রি, কদমি ও পাতি লিচু। এক সময় ব্যাপক হারে পাতি লিচুর বাগান ছিল। পাতি লিচুর তুলনায় চায়না থ্রি (কদমি) লিচুর সাইজ একটু বড় ও রসালো বিধায় এখন সোনারগাঁয়ে ব্যাপক হারে কদমি লিচুর বাগান করা হচ্ছে। কদমি লিচু গাছ পাতি লিচুর তুলনায় ছোট হওয়ার কারণে এক বিঘা জমিতে ৫০-৬০টি কদমি লিচু গাছ লাগানো যায়। পরিপক্ক একটি কদমি লিচু বাগান বছরে প্রায় বিঘা ৫ লাখ টাকার উপর অর্থ উপার্জন হয়। সে জন্য আগের চেয়ে দিনে দিনে সোনারগাঁয়ে লিচু বাগানের সংখ্যা ক্রমই বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের লিচুর বাগানের মালিক আলমগীর জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর সব বাগানেই লিচুর ফলন অনেক হয়েছে। গত বছর যে বাগান এক থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার আশা করা যায় সেই বাগান দুই লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারবো।  লিচু বাগানের ক্রেতা আব্দুল জলিল বলেন, এবার অন্যবারের তুলনায় লিচু ফলন ভালো হয়েছে। তবে অনাবৃষ্টি ও রোদের কারণে লিচু ফোলেনি। সোনারগাঁয়ের লিচু দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারা নিতে আসছেন। এই লিচু আগে আসে বলে দাম কিছুটা বেশি।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আকতার জানান, এবছর লিচুর ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়-তুফান কম হলে লিচুর দাম ভালো পাবেন কৃষকেরা। লিচুর আবাদ আরও বাড়ানোর জন্য কৃষি অফিস কাজ করছে। তিনি বলেন, তিন জন উপসহকারী প্রতিটি ইউনিয়নে বাগান মালিকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। লিচুর মুকুল আসার পর পরই গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া, বাগানে কীটপতঙ্গ, মাকড়সা দূর করার জন্য বালাইনাশক স্প্রে করাসহ গাছ ও মুকুলের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে গাছ মালিকদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তারা। এছাড়া উপজেলা কৃষি উপসহকারী, জনবল নিয়ে লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাঠে কাজ করছেন। তিনি আরও জানান, সোনারগাঁয়ে প্রায় একশ একর জমিতে দুই শতাধিক বাগানে লিচুর আবাদ হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে সোনারগাঁয়ে লিচু চাষ বাড়াতে লিচু চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত