অনাবৃষ্টি

ঠাকুরগাঁওয়ে আমন চাষ নিয়ে কৃষকের শঙ্কা

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২২, ১২:২৩

সাহস ডেস্ক

ঠাকুরগাঁওয়ে অনাবৃষ্টির কারণে আমনের ভরা মৌসুমেও ধান রোপন করতে পারছেন না কৃষকেরা। এছাড়া ডিজেলসহ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে সমস্যা আরও জটিল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় জেলায় আমন আবাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে জেলা কৃষি অফিস।

দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর একটি জেলা ঠাকুরগাঁও। আমন চাষে বৃষ্টির পানির উপর নির্ভর করে করে অধিকাংশ মানুষ। তবে যেখানে সেচ সুবিধা রয়েছে সেখানে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দানারহাট, বরুনাগাঁও, শীবগঞ্জ, নারগুন, বেগুনবাড়ি, খোঁচাবাড়ি ও জেলার পীরগঞ্জ, হরিপুর, রানীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন চারা রোপন করছেন কৃষকেরা। তবে বৃষ্টির পানির অভাবে উঁচু জমিতে লাগানো ধানের ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। এখনও বৃষ্টির পানির অপেক্ষায় রয়েছেন এ জেলার কৃষক।

অপরদিকে ডিজেলসহ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষকেরা পড়েছেন সমস্যায়। আমনের ক্ষেতে পানি নিতে শ্যালো মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু কিছু স্থানে বিদ্যুতচালিত পাম্প ব্যবহার করে সেচের কাজ করা হচ্ছে। তবে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং এর কারণে তাও ব্যাহত হচ্ছে। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপগুলোও লোডশেডিংয়ের ফলে ঠিকমত চলতে পারছে না। ফলে নানামুখী সমস্যায় রয়েছেন কৃষকেরা।

সদর উপজেলার ভেলজান গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ জানান, তিনি এ বছর আড়াই একর জমিতে আমন ধান লাগানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড রোদ ও তাপদাহে এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন।

সদর উপজেলার পারপুগী এলাকার কৃষক গিয়াস উদ্দিন জানান, প্রত্যেক বছরের মত এ বছর তিনি ৩ একর জমিতে আমন চারা লাগাবেন। জমি প্রস্তুতও করেছেন, কিন্তু বৃষ্টির পানির অভাবে শ্রমিক নিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন। এ অবস্থায় আমন লাগানোর সময় পার হয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। এর মধ্যে এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে মাত্র ১৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, অন্যান্য ফসলের মতো ধানের জন্যও বিখ্যাত এ জেলা। প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয় এ জেলায়। প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছরও কৃষকদের যাবতীয় কৃষি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। বৃষ্টির পানির অভাবে একটু সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে উচু জমিগুলোতে পানি থাকছে না। বৃষ্টির পানি না হওয়া পর্যন্ত সম্পূরক সেচ ব্যবস্থা চালু রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেচ পাম্পগুলোও সচল রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান উৎপাদন হবে। কৃষকেরা এ বছরও ধানের ন্যায্য দাম পাবেন বলেও  আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত