রাসিক মেয়রকে অবৈধভাবে আটকে রাখার অভিযোগ

প্রকাশ | ৩১ মে ২০১৬, ১৩:২৬

সব মামলায় জামিন পেলেও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে অবৈধভাবে কারাগারে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। রোববার সকালে রাজশাহী আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জাতীয়তাবাদি আইনজীবী ফোরাম ও রাজশাহী আইনজীবী সমিতির নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেয়র বুলবুলের নামে সব মিলিয়ে ১৯টি মামলা দিয়েছে বর্তমান সরকার। এসব মামলার মধ্যে ১৭টিতেই তিনি বিচারিক আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।

সব শেষ গত ২৫ মে হাইকোর্ট থেকে অবশিষ্ট দুটি মামলায় জামিন পান তিনি। এরপর দুটি মামলার জামিন-সংক্রান্ত কাগজপত্র গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। এর পরও মেয়র বুলবুলকে এখন পর্যন্ত জামিন দেয়নি কারাগার কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলন থেকে আদালতের নির্দেশনা মেনে অবিলম্বে মেয়র বুলবুলকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয়। অন্যথায় কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা করা হবে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, জাতীয়তাবাদি আইনজীবী ফোরামের রাজশাহী শাখার সভাপতি এরশাদ আলী ঈশা, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল মনির, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আফতাবুর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি একেএম মিজানুর রহমান।

এদিকে, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান বলেন, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের জামিন সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের আদেশের কপি তারা হাতে পাবার আগেই অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে তাকে মুক্ত না করা সংক্রান্ত আরেকটি চিঠি পান। ওই আদেশের প্রেক্ষিতে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয় ওই চিঠিতে। ফলে তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। সোমবার বিষয়টি নিস্পত্তি হতে পারে বলেও জানান ওই কারা কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ মে নগরীতে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ সরকার হত্যা মামলাসহ চারটি মামলায় আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও রাসিক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

প্যানেল মেয়রদের পাশ কাটিয়ে গত বছরের ৩১ মে জুন আওয়ামী লীগ পন্থি কাউন্সিলর নিজাম উল আযীমকে রাসিকের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষতা প্রদান করে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেন স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব সরোজ কুমার নাথ। আইনসম্মত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে না হওয়ায় সম্প্রতি ওই আদেশ বাতিল ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত। ওই আদেশে নিজামের দায়িত্বগ্রহণও অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

এরপর ক্ষমতায় টিকে থাকতে কথিত বিশেষ সভা করে বিএনপিপন্থি কাউন্সিলরদের নিয়ে গড়া প্যানেল মেয়রদের সরিয়ে দেন নিজাম উল আযীম। নিজেকে ১ নম্বর প্যানেল করে আস্থাভাজনদের নিয়ে নতুন প্যানেল মেয়র গঠন করেন তিনি। পরে ভেঙ্গে দেন বিভিন্ন স্থায়ি কমিটিগুলোও। তার এসব কর্মকা- প্রত্যাখ্যান করেন বিএনটি পন্থি কাউন্সিলরসহ সংখ্যাগরিষ্ট কাউন্সিলররা। এনিয়ে মুখোমুখি বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পন্থি কাউন্সিলররা। ফলে স্থবিরতা বিরাজ করছে নগর সংস্থায়।