চাঁপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৩
প্রকাশ | ২৪ মে ২০১৭, ১৮:৫১
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর ও নাচোল উপজেলায় বুধবার জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা ৪টি বাড়িতে অভিযান শেষে ৩ কেজি গান পাওডার, তিনটি পিস্তল, ১টি ওয়ান শ্যুটারগান, তিনটি ম্যাগজিন, ১৩ রাউন্ড গুলি ও একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করেছে র্যাব।
এঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩ জনকে। তারা জেএমবি সদস্য বলে জানিয়েছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গোমস্তাপুর উপজেলার গোমস্তাপুর সদর ইউনিয়নের বালুগ্রাম শিমুলতলা গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে আব্দুস শুকুর (৩৩), চকপুস্তম এলাকার টুনু মোড়লের ছেলে সাইফুল আলম (৪৩) ও বালুগ্রাম রাজারামপুর মহল্লার মৃত.আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪৩)।
অভিযানে ১টি বাড়ি থেকে ১টি ওয়ান শ্যুটারগান, ২টি পিস্তল, ১টি খেলনা পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন ও ৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অন্য ৩টি বাড়িতে কিছু পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে নাচোলের চাঁনপাড়া গ্রামের তবরুল হকের ছেলে আব্দুল মজিদ ওরফে ভানুকে (৪২)।
বুধবার ভোররাত ৪টায় শুরু হওয়া এই অভিযান বেলা সোয়া ১১টায় সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। অভিযান শেষে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাহবুব আলম গোমস্তাপুরের বালুগ্রাম শিমুলতলায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ভোররাত চারটার দিকে গোমস্তাপুর বাজার এলাকা থেকে তিন জেএমবি সদস্যকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের নিকট ৩ কেজি গান পাউডার, ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন ও ৪ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। তাদের দেওয়া তথ্যে গোমস্তাপুর ও নাচোল উপজেলায় ২টি করে ৪ বাড়ি ঘেরাও করে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে পর্যায়ক্রমে অভিযান চালানো হয়।
বাড়িগুলি হচ্ছে গোমস্তাপুর উপজেলার বালুগ্রাম শিমুলতলা গ্রামের আব্দুস শুকুরের বাড়ি, চকপুস্তম এলাকার এজাবুল হকের বাড়ি, নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চাঁনপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের বাড়ি ও আলিসাহাসপুর গ্রামের আফজালের বাড়ি।
এর মধ্যে আব্দুস শুকুরের বাড়ি থেকে অস্ত্র, গুলি ও ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য মতে সে জেএমবির পুরোনো সদস্য এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক বিষয়ে দক্ষ। সে বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণও প্রদান করে। তল্লাশী চালানো অন্য বাড়িগুলি থেকে মেলেনি কিছু।
তিনি বলেন, লোকালয় থেকে দূরে প্রত্যন্ত এলাকায় আমবাগান ঘেরা এ অঞ্চলে জঙ্গিরা সংগঠিত হচ্ছে, তারা প্রায়ই বৈঠক ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ করে এমন তথ্য র্যাবের নিকট দীর্ঘদিন যাবৎ ছিল। র্যাব এব্যাপারে নজরদারি অব্যহত রেখেছিল।
বুধবার ভোররাতে জঙ্গি যাতায়াতের পথগুলিতে ফাঁদ পেতে প্রথমে ৩ জনকে ধরা হয়। র্যাব-৫ অধিনায়ক জানান, ২০১৫ সালের পর জঙ্গি তৎপরতায় যুক্তদের নব্য জেএমবি আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু গ্রেপ্তারকৃতরা তামিম-সারোয়ার গ্রুপের পুরোনো জেএমবি সদস্য। এই সংগঠনটি বেশ বড় ও এদের অর্ধশতের বেশী সদস্য সক্রিয় রয়েছে বলে র্যাবের নিকট তথ্য রয়েছে বলেও জানান তিনি। গ্রেপ্তারকৃতদের নিকট অস্ত্র, বিস্ফোরক পাওয়ায় এদের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল বলে ধারনা করা হচ্ছে।
র্যাব-৫ অধিনায়ক আরো জানান, গোমস্তাপুর বাজার থেকে গ্রেপ্তার হওয়া জেএমবির ৩ সদস্যর বিরুদ্ধে গোমস্তাপুর থানায় মামলা করা হবে। এর আগে বুধবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জে র্যাব-৫ ক্যাম্পের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এনামুল করিম অস্ত্র, গানপাওডারসহ তিন জন আটক, জঙ্গি আস্তানার সন্ধান লাভ ও অস্ত্র, বিস্ফোরক থাকার বিষযটি জানান। অভিযানের পর গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।