নির্বাচন নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ, বাস টার্মিনাল রণক্ষেত্র

প্রকাশ | ২৫ মে ২০১৭, ১৬:৪০

রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভোর চারটা থেকে শ্রমিকদের দু’পক্ষের সংঘর্ষে মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

ভোরে সংঘর্ষের সময় তিন নির্বাচন কমিশনার ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয় সাংবাদিকের ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন। ছিনতাই করা হয় ব্যালট পেপার। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন খান বলেন, ভোট গণনা শুরুর আগেই শ্রমিকদের একটি পক্ষ কেন্দ্রে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় অপরপক্ষ বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে।

সংঘর্ষের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অঙ্কুর সেনসহ তিন কমিশনার আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে তিন নির্বাচন কমিশনারকে উদ্ধার করে। 

শ্রমিকরা জানান, ব্যালট পেপার বাছাই শেষ হয় ভোর চারটার দিকে। বাছাইয়ের পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কারা নির্বাচিত হচ্ছেন তা অনেকটায় নিশ্চিত হন প্রার্থীরা। বাছাই শেষে ভোট গণনা শুরু হলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর সমর্থকরা সেখানে হামলা চালিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। 

এ সময় সভাপতি পদের প্রার্থী কামাল হোসেন রবির সমর্থকরা বাধা দিতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষ ধারালো দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুরো টার্মিনাল এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। 

এ সময় ছবি তুলতে গেলে এটিএন বাংলার রিপোর্টার সুজাউদ্দিন ছোটনকে লাঞ্ছিত করে তার ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষ অস্ত্র হাতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেও পুলিশ প্রাথমিক পর্যায়ে নিষ্ক্রিয় থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে দুপুর ১টায় শিরোইল বাসস্টান্ডে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিআরটিসি কাউন্টার, বাস ও ন্যাশনাল ট্রাভেলসের কাউন্টার ভাঙচুর করেছে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর লোকজন। 

রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে বুধবার সকাল আটটা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১০টি পদে ৬০ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৫ জন।