স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:০৩

অনলাইন ডেস্ক

আজ ১৬ ডিসেম্বর শনিবার যথাযথ মর্যাদায় সারা দেশে দিনটি পালিত হচ্ছে। ৪৬তম মহান বিজয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল নেমেছে। সকাল পূব আকাশে সূর্য উঁকি দেওয়ার পর সকাল ৬টা ৩৪মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বেদীতলে শহীদদের উদ্দেশে ফুল দিয়ে প্রথমে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরা নিরবে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় তিন বাহিনীর প্রধানরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে রীতি অনুযায়ী প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানানোর পরপরই জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে একে একে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিক, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর আমন্ত্রিত সদস্যসহ অন্যরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তারপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত দেওয়া হয়।

সকাল ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমভিত্তিক যান্ত্রিক বহর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপভোগ করছেন। 

মহান বিজয় দিবসে উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বিজয় দিবস সরকারি ছুটির দিন। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হয়। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। সংবাদপত্র বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে, বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করেছে।

এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হয় এবং এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হবে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একই ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচেজ্ছ। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। 

সাহস২৪.কম/জুয়েনা/আল মনসুর