খুলনায় হিন্দুদের মন্দির, ঘর-বাড়ি ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ১০

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২১, ২১:৪২

সাহস ডেস্ক

খুলনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, বাড়ি ও দোকানপাটে হামলার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেএলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঘটনায় চারটি মন্দির, দুটি হিন্দু বাড়ি ও ছয়টি হিন্দু দোকানে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

গত ৭ আগস্ট (শনিবার) সন্ধ্যায় জেলার রূপসা উপজেলার শিয়ালি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেখপুরা, বামনডাঙ্গা এবং চাঁদপুর এলাকার শতাধিক যুবক সংঘবদ্ধভাবে এই হামলা চালায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।

রূপসা থানা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতেই এ নিয়ে একটি মামলা হওয়ার পর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মামলাটিতে কাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, হামলাকারীরা প্রথমে শিয়ালি মহাশ্মশান মন্দিরে হামলা চালায়। এসময় শ্মশানের প্রতিমা ও যাবতীয় উপকরণ ভাঙচুর করে। সেখান থেকে তারা শিয়ালি পূর্বপাড়া এলাকায় হামলা চালায়। একই সাথে সে সময় এসময় পূর্বপাড়ার হরি মন্দির, শিয়ালি পূর্বপাড়া দূর্গা মন্দির এবং শিবপদ ধরের গোবিন্দ মন্দিরের সব প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।

পরবর্তীতে হামলাকারীরা শিবপদ ধরের বাড়িতে হামলা করে এবং একে একে বলাই মল্লিকের দোকান ও বাড়ি, অনির্বাণ হীরার চায়ের দোকান, প্রিতম মজুমদারের মেশিনারিজের দোকান, গনেশ মল্লিকের ওষুধের দোকান, শ্রীবাস মল্লিকের মুদি দোকান এবং সৌরভ মল্লিকের মুদি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

ঘটনার পরবর্তীতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া তাছনিম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান মাসুম বিল্লাহ, রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান সাধন অধিকারী, পূজা উদযাপন পরিষদ রূপসা উপজেলার সভাপতি শক্তিপদ বসু, সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল সেন।

এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের বিষয়টি জানান রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন।

পূজা উদযাপন পরিষদ রূপসা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল সেন বলেন, হামলায় চারটি মন্দিরের ১০টি প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা রয়েছে।

গত ৬ আগস্ট রাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের নামসংকীর্তনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ইমামের ওপর কোনও হামলা করেনি বলেও জানান তিনি।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শিয়ালি পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা নাজিম উদ্দিন বলেন, গত ৬ আগস্ট এশার নামাজ চলাকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরুষ ও নারী বাদ্যযন্ত্র নিয়ে মসজিদের সামনে গানবাজনা শুরু করেন। এ অবস্থায় বের হয়ে নামাজের সময় তাদের শব্দ না করার জন্য অনুরোধ করি। তখন এক হিন্দু ব্যক্তি আমাকে ধাক্কা দেন। এতে মুসল্লি ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। রাতেই সে ঘটনা শেষ হয়। তবে ৭ আগস্টের কোনও ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত