যুব সমাজকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২২, ১৭:০৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক চর্চায় দেশের যুব সমাজকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার (৫ আগস্ট) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী এবং শহীদ শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের যুব সমাজ খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চায় এসব দিকে যেন আন্তরিক হয়, নিজেদেরকে আরও সম্পৃক্ত করে। সেটা আমার আকাঙ্ক্ষা। আমরা যখন সরকারে আসছি ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। একটা ফান্ড গঠন করেছি। একটা বয়সে এসে ক্রীড়াবিদদের আর অর্থ উপার্জন করার ক্ষমতা থাকে না। তাই সে সময় যেন বিপদে না পড়ে সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শিশুরা থেকে শুরু করে যুব সমাজ পর্যন্ত যাতে সবাই খেলাধুলার সুযোগ পায় এবং সাংস্কৃতিক চর্চায় পারদর্শী হয় সে লক্ষ্যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন শহীদ শেখ কামাল। এ দেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক জগতে তার অবদান অপরিসীম।

‘শেখ কামাল বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। ফুটবল খেলতেন, ক্রিকেট খেলতেন। ভালো গান গাইতেন। সেতার বাজাতেন। নাটক করতেন। শেখ কামাল বেঁচে থাকলে আরও অনেক উন্নতি করতেন। আধুনিক ফুটবল খেলায় আবাহনী ক্রীড়াচক্র গড়ে তোলা বা বিভিন্ন খেলাধুলায় একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তিনি।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আরাম-আয়েশ এসব দিকে যেন নজর না যায় সেভাবেই কিন্তু আমাদের মানুষ করে গেছেন আমাদের মা। কামাল ছিলেন সাদাসিধে। কামাল এবং নূর দুজন একই সঙ্গে কর্নেল ওসমানীর এডিসি হয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় ১৫ আগস্ট সেই নূরই প্রথম আসে আমাদের বাড়িতে।

‘কামাল বোধহয় ধোঁকায় পড়ে গিয়েছেন তাকে দেখে। ভেবেছিলেন তাদেরকে উদ্ধার করতে আসছে, কিন্তু সে যে ঘাতক হয়ে এসেছে সেটা বোধহয় জানতেন না। তারা শেখ কামালকেই প্রথম গুলি করে। তারপর পরিবারের অন্য সদস্যদের একে একে হত্যা করে।’

পারিবারিক প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সুলতানার সাথে বিয়েতে কামালের আপত্তি ছিল। কেননা আমার সাথে সে খেলা করত, আমার ছোট বোনের মতো ছিল। জামাল, রেহানা, রাসেল সবাই সুলতানার খুব ভক্ত ছিল। আব্বাও বলতেন সুলতানার চোখ দুটো কি সুন্দর। কামালকে জোর করে রাজি করেছিলাম সুলতানের সাথে বিয়েতে। দুর্ভাগ্য কামালের সাথে সুলতানাকেও হারাতে হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মায়ের ইচ্ছা ছিল যেন শেখ কামাল মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করে। তাই কামাল সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন। পরীক্ষা দিয়েছিলেন, রেজাল্ট আমরা এসে পড়ে পেয়েছি, এটা হচ্ছে দুর্ভাগ্য। তার রেজাল্ট সে দেখে যেতে পারেনি। সুলতানা, কামাল এক সাথেই পরীক্ষা দিয়েছিল। একজনের ভাইভা শেষ হয়েছিল আরেকজন ভাইবা শেষ করতে পারেনি তার আগেই সে না ফেরার দেশে চলে যায়।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমরা সবাই সংগঠন করতাম। কোনো ত্যাগ নিয়ে আমাদের চিন্তা ছিল না। বাবাকে দেখতাম মানুষের জন্য রাজনীতি করতেন, তার আদর্শ নিয়েই পথ চলতাম। বাবা-মা আমাদের শিখিয়েছিলেন সাদাসিধে জীবন যাপন করতে হবে। সিম্পল লিভিং হাই থিঙ্কিং এটাই ছিল আমাদের মোটো।’

ভাই কামালের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কামাল সব সময় অত্যন্ত সাদাসিধেভাবে চলাফেরা করতেন। তার পোশাক-পরিচ্ছদ জীবনযাত্রা খুবই সাদাসিধে ছিল। এমনকি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির ছেলে বা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে কোনো অহমিকা ছিল না। আমার মা-বাবা কখনো তা চাননি।’

সাহস২৪.কম/এসএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত