পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি

ইজারাদার ও অদক্ষ মাঝিকে দায়ী করে প্রতিবেদন দাখিল

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২২, ১১:৫৩

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মন্দিরে পূজা দিতে গিয়ে করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় ঘাট ইজারাদার ও মাঝির অদক্ষতাকে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা করেছে তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়। একই সাথে আরও বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তবে প্রতিবেদনের অন্য বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। সোমবার (০৩ অক্টোবর) রাতে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, আমরা তদন্ত প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি হাতে আসলে প্রকাশ করা হবে। তবে বেশ কিছু দিন যাচাই বাছাই করে দেখা গিয়েছে প্রথামিক ভাবে নৌকাডুবির ঘটনায় ইজারাদার এবং অদক্ষ মাঝির দায় রয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু দিক চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের পাশপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত চলমান রয়েছে। সকল তদন্ত রিপোর্ট জমা হওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি জানা যাবে। তবে প্রতিবেদন নিয়ে এর বেশি বিস্তারিত জানাননি তিনি।

এর আগে মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাটে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ওই দিনের গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি রবিবার (০২ অক্টোবর) দিবাগত রাতে জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

প্রতিবেদন জমার বিষয়ে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায় জানান, রবিবার রাতেই প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমরা এ বিষয়ে বিভিন্ন দিক অনুসন্ধান করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। এখন বাকি বিষয়টি জেলা প্রশাসনক জানাতে পারবেন।

উল্লেখ্য, মহালয়া পূজা উপলক্ষে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বোদা উপজেলার আউলিয়ার ঘাটে শতাধিক সনাতনধর্মীদের পুণ্যার্থী নিয়ে একটি নৌকা করতোয়া নদী পাড় হয়ে বদ্বেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিল। নৌকাটি নদীর মাঝে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৬৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন শিশুসহ তিনজন। ঘটনার ওইদিনই পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়কে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।

এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের মধ্যে ৩০ নারী, ১৮ পুরুষ ও ২১ শিশুর মৃতদেহ রয়েছে। এর মাঝে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৪৫ জন, আটোয়ারী উপজেলার ২ জন, দেবীগঞ্জ উপজেলার ১৮ জন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৩ জন এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১ জন রয়েছেন।

তবে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ছত্রশিকারপুর হাতিডুবা গ্রামের মদন চন্দ্রের ছেলে ভুপেন ওরফে পানিয়া (৪০), বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের সরেন্দ্রনাথ (৬৫) এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথের মেয়ে জয়া রানি (৪) এখনও নিখোঁজ রয়েছে। করতোয়া নদী থেকে মৃতদেহের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত