৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ: অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৪৮

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন রাসায়নিক সার আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে, তা অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প করপোরেশন (বিসিআইসি) চেয়ারম্যানকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।,

সার আত্মসাৎ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনার পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন। ,

‘৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এ সময় আদালতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।,

পরে ডিএজি মানিক বলেন, ‘৭২ হাজার মেট্রিক টন সার আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুদককে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বিসিআইসি চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তাঁকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।’

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ‘৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা।,

মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। ,

পোটন ট্রেডার্স যে সার আত্মসাৎ করেছে, তা উঠে এসেছে সারের আমদানিকারক শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) দুটি তদন্তে। সারগুলো খালাস হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ মে’র মধ্যে। সার সরবরাহ না করার পর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বিসিআইসি। সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বিসিআইসির পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ,

কামরুল আশরাফ খান ২০১৪ সালে নরসিংদী-২ আসনে জাসদের প্রার্থী জায়েদুল কবিরকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন। জায়েদুল মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন। কামরুল আশরাফ খান আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। বর্তমানে এই আসনের সংসদ সদস্য তাঁর ভাই আনোয়ারুল আশরাফ খান, যিনি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত। 

সার আত্মসাতের বিষয়ে কামরুল আশরাফ খানের বক্তব্য জানতে বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা এবং খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছিল। প্রশ্ন পাঠানো হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপেও। তবে সাড়া পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।,

সাহস২৪.কম/এসএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত