লক্ষ্মীপুরে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ

প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৩, ১৮:৩০

লক্ষ্মীপুরে ইটভাটায় স্বামী মো. শাকিলকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন ও তার স্ত্রী (১৮) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে ভূক্তভোগী নারী এ অভিযোগ করেন। বিকালে তিনি সদর মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিনকে ঘটনাটি জানিয়েছেন।

এদিকে ৯৯৯ এ কল পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চররমনী গ্রামের বনফুল ব্রিকস এন্ড কোম্পানিতে (বিবিসি) অভিযানে যায়।

নির্যাতিত মো. শাকিল ভোলা জেলার বাসিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্ত নারী বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা। তাদের সংসারে আড়াই বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। তারা চট্টগ্রামের আজিমপাড়ায় থাকেন। প্রায় ৩ মাস আগে ইটভাটাতে শ্রমিক হিসেবে কাজের উদ্দেশে তারা লক্ষ্মীপুরের উত্তর চররমনী গ্রামের বিবিসি ইটভাটাতে আসে। ইটভাটার পাশেই তারা একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন।

ক্ষতিগ্রস্থদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাকিল চট্টগ্রামে আজিমপাড়া এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। সম্পর্কীয় একজনের সঙ্গে তিন মাস আগে শাকিল লক্ষ্মীপুরে ইটভাটায় কাজ করতে আসে। তিনদিন আগে ওই লোক পালিয়ে যায়। শাকিল মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ইটভাটায় আসলে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ তার কাছ থেকে ওই লোকটির সন্ধান দিতে বলে। এতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা শাকিলকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। দীর্ঘসময় ধরে ঘরে না ফেরায় স্বামীকে খুঁজতে ইটভাটায় যায় তার স্ত্রী। এরপর তার স্বামীর কাছে টাকা পাবে বলে জানায় ইটভাটা কর্তৃপক্ষ। টাকা পেলেই তাকে ছাড়বে বলেও জানায় তারা।

এছাড়া টাকা না দিতে পারলে তাদের সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করার জন্য কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে তিনি বাসায় চলে যান। এরপর গভীর রাতে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ৩ জন করে আরও ৬ জন গিয়ে তার সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করে। একপর্যায়ে তারাই তার ডান হাতে সিগারেট আগুন লাগিয়ে ছ্যাকা দেয় বলে অভিযোগ করে ওই নারী জানিয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত নারী বলেন, আমরা অগ্রীম কোন টাকা নিইনি। তবুও তারা আমার স্বামীকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেছে। আমি ছাড়াতে গেলে তারা আমার সঙ্গে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক (ধর্ষণ) করে। নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় সাংবাদিকদের জানিয়েছি। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পৌঁছে আমার স্বামীকে বাঁধা অবস্থায় পেয়েছে।

জামাল মাঝি সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমি কিছুই জানি না। বিবিসি ব্রিকসের স্বত্ত্বাধিকারী বাহার উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমি ঢাকায় আছি। বিস্তারিত বলতে পারছি না।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ভূক্তভোগী নারীর কাছ থেকে ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।

সাহস২৪.কম/এএম.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত