‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’

জাতিসংঘে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার স্বীকৃতি

প্রকাশ | ১৭ মে ২০২৩, ১৫:১৬ | আপডেট: ১৭ মে ২০২৩, ১৫:২৯

অনলাইন ডেস্ক
জাতিসংঘে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক একটি রেজল্যুশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়

জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজ্যুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজ্যুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। এটি জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবায় সাম্য আনয়নে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) সাধারণ পরিষদে রেজ্যুলেশনটি উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এই রেজ্যুলেশনটি কো-স্পন্সর করে।

রাষ্ট্রদূত মুহিত তার বক্তব্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনে এই রেজ্যুলেশনের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলো কর্তৃক এই রেজ্যুলেশনের অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।

মুহিত বলেন, রেজ্যুলেশনটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নিমিত্তে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই রেজ্যুলেশনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে।

কারণ, এটি সদস্য দেশগুলো, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক, দাতাদের যথাযথ কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানায়।

উল্লেখ্য, দেশের মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতাভুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা তৃণমূল পর্যায়ে বিপ্লব ঘটিয়েছে। মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার এ পর্যন্ত সারা দেশে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বে ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে রেজ্যুলেশনটি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে নেগোশিয়েশন করেন উপস্থায়ী প্রতিনিধি ড. মো. মনোয়ার হোসেন। মিশন কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এবং এর ধারাবাহিকতায় রেজ্যুলেশনটি চলতি বছরের শুরুর দিকে মিশন সদস্য রাষ্ট্রের বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে গত চার মাস নিবিড় আলোচনা ও নেগোশিয়েশনের পর প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।