নির্মাণ ব্যয় ১২ কোটি টাকা

উদ্বোধনের ৬ মাসেও চালু হয়নি ‘ট্রমা সেন্টার’

প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ১৪:১১

এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় স্থাপন করা হয় ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টার

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টার উদ্বোধনের ৬ মাসেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রটি জনসাধারণের কোনো কাজেই আসছে না। বরং মাদক সেবীদের নিরাপদ স্থান হয়ে উঠেছে ট্রমা সেন্টার। জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা স্বাস্থ্য বিভাগের।

সরেজমিনে স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের সন্ন্যাসীর চর ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে সদ্য নির্মিত চকচকে নতুন তিনতলাবিশিষ্ট ভবনটি। ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারটি গত বছরের নভেম্বরে উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। কিন্তু সেখানে মূল ভবনে এখনো ঝুলছে তালা। পাশের একটি সার্ভিস ভবনের দুতলায় রুমের তালা খোলা অবস্থায় পরে আছে। ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়লো মেঝেতে পরে আছে মাদক সেবনের আলামত।

অন্য একটি রুমে গিয়ে দেখা যায় রাতে আড্ডা হয় এমন কিছু আলামতের। রাষ্ট্রের ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ট্রমা সেন্টারটি অলস পড়ে থাকায় দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ফরিদপুর ও ঢাকা। অনেক সময় মাঝপথেই রোগীর মৃত্যু হয়। তাই জনস্বার্থে দ্রুত ট্রমা সেন্টারটি চালুর দাবি এলাকাবাসীর।

গত ১৯ মার্চ এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুরে যাত্রীবাহী ইমাদ পরিবহনের একটি বাস দুর্ঘটনায় ১৯ জনের প্রাণহানি হয়। আহত হয় অনেকেই। প্রতিনিয়তই এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা কমবেশি ঘটলেও কাজে আসছে না রাষ্ট্রীয় অর্থে নির্মিত এই ট্রমা সেন্টার।

স্থানীয় বাসিন্দা আ: সালাম বলেন, মানুষের স্বার্থে এই ট্রমা সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু মানুষের কোনো উপকারেই আসছে না। সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে রোগীদের ঢাকা বা ফরিদপুরে নিতে নিতে অনেকেই প্রাণ হারায়। 

চৌধুরী পরিবহণের যাত্রী এস এম রবিউল হাসান রাজা বলেন, এই মহাসড়ক দিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করে দক্ষিণ বঙ্গের মানুষ। এই সড়কে দুর্ঘটনায় কেউ আহত হলে, তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার স্থান নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এটি জনস্বার্থে দ্রুত চালু করা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কোহিনুর হাওলাদার বলেন, আমাদের এক্সপ্রেসওয়েতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। এই ট্রমা সেন্টারটি চালু হলে এই অঞ্চলে দুর্ঘটনায় আহতরা দ্রুত চিকিৎসা সেবা পাবে। আশা করি খুব দ্রুতই এটি চালু হবে।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহম্মেদ খান জানান, ওখানে জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় পূর্ণভাবে চালু করত পারছি না। আংশিকভাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় বহির্বিভাগ চালু করার চেষ্টা করছি। আর এটি যদি জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট পাওয়া যায়, তাহলে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে। এটি চালুর জন্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট শাখায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই চালু হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত