দিনাজপুরে এখনও পানিবন্দি কয়েক হাজার পরিবার
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:২৯

দিনাজপুরে টানা তিন দিন বৃষ্টি হওয়ার পর গত দুইদিন বৃষ্টি না হলেও পুনর্ভবা নদীর তীরবর্তী শান্তিপুর, গোবরা পাড়া, হিরাহার, মাজাডাঙ্গা চককাঞ্চন, কান্দিপুর এলাকার প্রায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
দিনাজপুরের পুনর্ভবা নদীতে পানি বিপদসীমা ৩৩. ০৫ মিটার নির্ধারণ করা গেলেও মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টায় থেকে তা বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে । তবে একই দিন দুপুরে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দিনাজপুর পারি উন্নয়ন প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম জানান, পূনর্ভবা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে প্রতি তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর প্রায় ৫ সেন্টিমিটার পানি কমছে। রাতের মধ্যেই পূনর্ভবা নদীর পানি নদতে নেমে যেতে পারে।
দিনাজপুর পৌর শহরের ১ নং ওয়ার্ডের শান্তিপুর এলাকায় দেখা গেছে, ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় থাকায় দুর্ভোগে রয়েছে। পরিবারগুলোর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাড়ি থেকে বের করতে না পারায় অনেক আসবাপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে । আবার কেউ কেউ অল্প কিছু আসবাবপত্র নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তার পাশে ছোট টাবু টানিয়ে রাত্রি যাপন করছে। এই অবস্থায় বাসা বাড়িতে পানি ওঠার কারণে রান্না করার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে রাস্তার পাশেই রান্না করে জীবন যাপন করছে।
এদিকে, অতিরিক্ত পানিতে পাকা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। এছাড়াও ধানের বিশাল একটা অংশ পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। কলা বাগানসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি বিশেষ করে লাউ, পটল ক্ষেত, লাল শাকসহ বেশ কিছু ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুর খাবার সংকটে রয়েছে।
শান্তিপুরের মরিয়ম বেগম বলেন , টানা তিন ধরে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে বৃষ্টির পানি নেমে আসায় আশ্বিন মাসে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা হয়েছে। এখন আমাদের ঘর বাড়ী পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আমরা ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে রাস্তা রাত্রি যাপন করছি ।
মাঝাডাঙ্গার বকুল মিয়া বলেন, নদীর পাশ্বেই আমার জমিতে লাউ, বেগুন, পটল, মুলার শাক রোপন করেছিলাম। সব পানিতে তলিয়ে পচে গেছে। এখন যে কি করব? কি খাব? কোন ব্যবস্তাই নেই।
শান্তিপুর গ্রামের আজিজুন নাহার বলেন, আমাদের বাড়ির উপর দিয়ে এখন স্রোত চলছে। আমরা কোন ত্রাণ পাই নাই। ডিসি স্যার, এসপি স্যার ত্রাণ নিয়ে এসেছিল। যারা বাধের রাস্তায় বসে থাকে তাদেরকে দিয়ে চলে যায়। আর আমাদের বাড়ি একটু ভিতরে তাই কেউ আর আমাদেরকে ত্রাণ দিতে আসে না ।
জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, গত তিনদিন ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকার পানিবন্দি মানুষদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরদের মাধ্যমে তালিকা তৈরী করে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বৃষ্টি ভিজে কিংবা রাতের অন্ধাকারে এই ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করা হয়েছে । এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গত মানুষের তালিকা করে কিছু শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার বিলি করা হয়েছে।