নৈশ প্রহরীকে হত্যা করে স্বর্ণ লুট: গ্রেপ্তার-৭, ৬০ ভরি স্বর্ণ-১৬০ ভরি রুপা উদ্ধার
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:৩৩
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে দুটি স্বর্ণের দোকান লুট করেছে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। ঘটনার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ৭ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে লুন্ঠিত ৬০ ভরি স্বর্ণ-১৬০ ভরি রুপা এবং স্বর্ণ বিক্রির ৩লাখ ৫০ হাজার টাকা,একটি দেশীয় তৈরী পাইপগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ, একটি গ্যাস সিলিন্ডার ও একটি পাইপ।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার এসপি মো.শহীদুল ইসলাম। এর আগে, গত শুক্রবার ৮ ডিসেম্বর ভোর রাতের দিকে কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারের মা-মনি জুয়েলার্স ও নুর জুয়েলার্সে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তবে লুট হওয়া স্বর্ণালঙ্কারের বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। তবে পুলিশের ভাষ্য দুটি দোকান থেকে সর্বমোট ৭২ ভরি স্বর্ণ লুট করে ডাকাত দল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন,লক্ষীপুরের কমলনগর থানার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামের মৃত শহীদুল্লার ছেলে মো.নোমান (৩৫) একই জেলার কমলনগর থানার চর মার্টিন ইউনিয়নের পশ্চিম চর মার্টিন গ্রামের মোরশেদ আলমের বাড়ির মো.মোরশেদ আলমের ছেলে মো.সুজন হোসেন (২৭) কমলনগর থানার হাজীরহাট ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির সুভাষ চন্দ্র সরকারের ছেলে কৃঞ্চ কমল সরকার (৩২) নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নদনা ইউনিয়নের জগজীবনপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো.শাহাদাত হোসেন (৩২) একই উপজেলার বজরা ইউনিয়নের মুসলিম গ্রামের হাজী বাড়ির মো.সোলেমানের ছেলে মো.সাদ্দাম হোসেন ওরফে জিতু (৩০) বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার করিমপুর এলাকার মুন্সি বাড়ির মৃত অলি উল্যার ছেলে সালাউদ্দিন (৩২) কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের জৈনদপুর গ্রামের মোশারফ বিএসসির বাড়ির মৃত মো.শহীদুল্লার ছেলে মো.মিজানুর রহমান ওরফে রনি (৩৬)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন,গত শুক্রবার ১০-১৫ জনের একটি ডাকাত দল রাত ৩টার পর চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে প্রবেশ করেন। ওই সময় অস্ত্রের মুখে নৈশপ্রহরীসহ অন্যান্য চলাচলকারী লোকজনকে ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর প্রায় দুই ঘন্টা ডাকাতি সংঘটন করে। এ সময় ডাকাত দলকে বাধা দিলে নৈশ প্রহরী শহীদুল্লাহকে মাথায় আঘাত করলে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। হত্যাসহ ডাকাতির ঘটনায় কবিরহাট থানায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী একই দিন রাতে সাড়ে ১১টার দিকে বাদী হয়ে পেনাল কোর্ড ৩৯৬ ধারায় একটি মামলা রুজু করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে ডাকাতদের বহনকারী পিকআপ চালক নোমান লক্ষীপুর জেলার কমলনগর থানা এলাকায় লুন্ঠিত মালামাল বিক্রয়ের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে পুলিশ নোমানের অবস্থান চিহিৃত করে। পরে কমলনগর থানার মুন্সিরহাট এলাকা থেকে গতকাল রোববার ১০ ডিসেম্বের নোমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার ভাষ্যমতে জানা যায়, তার পূর্বে সে এলাকার পরিচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো.সুজনের কাছে মালামাল বিক্রি করার জন্য দেয়। মালামাল উদ্ধার করার জন্য সুজনকে তার বাড়িতে আটক করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুজন লুন্ঠিত মালামাল গ্রহণ এবং বিক্রয় করতে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করেন। সুজন জানায়, লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার কমলনগর থানার চরলরেন্স বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী কৃঞ্চ কমলের কাছে বিক্রি করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয় এবং ১৬০ ভরি রুপা সুজনের থেকে উদ্ধার করা হয়। মূলত এই দুর্ধর্ষ ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী মো.শাহাদাত।