জঞ্জাল

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:৪৬

ফারহা মৌরিন মৌ

জীবনটা ৩৬০° ঘুরে গেলো হঠাৎ।

নাহ্, ঘুরে একই পয়েন্টে এসে থামেনি।
পুরো জীবনের মোড় ঘুরে গেছে একদমই অন্যদিকে।

রক্তাক্ত, ক্ষত-বিক্ষত মনটাকে মলম মাখিয়ে চলছিলো।
কিন্তু কতদিন!
জোড়াতালি দিয়ে বেঁচে থাকবার সুখটাও
ওপরওয়ালার সহ্য হচ্ছিলো না।
তাই একেবারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।
তিলে তিলে নয়, আরেকটু দ্রুত লয়ে শেষ হোক।

প্রথমে মাথার ওপর থেকে বিশাল ছায়ারুপি
বটটাকে সরিয়ে দেই।
বয়েস মাত্র ৫৯! তো কি হয়েছে।
একে পঙ্গু করতে হলে, আগে বাপটাকে সরাতে হবে।
এরপর, ১৫ বছরের প্রেমের নাটকের অবশ্যি বলিহারি!
ভালোবাসা, প্রতিজ্ঞা, বিশ্বাস সবকিছু গুষ্টি উদ্ধার করে,
সাজানো পরিণয়ের রূপরেখা এঁকে দিলো
একদল আড়ালে থাকা শকুন।
টাকা আর সম্পদের পূজারী যারা!
সেই শকুনের প্রতিনিধি,
ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে দিল পতিদেব!
নতুন মাংসের গন্ধ চাই! পুরনো
আর কত...!

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে, মেয়েদের শরীরের মাংস একদিকে যেমন লোভনীয়,
আবার অন্যদিকে পরিত্যাজ্য! 
কি অদ্ভুত!
অবশ্য, যত দোষ, গিয়ে পড়লো তার মায়ের ঘাড়ে।
সে মরে গেলেই নাকি সংসারটা বাঁচতো!
লাথি মেরে বেরিয়ে এলো মেয়েটি।

মেয়েটি এখন একা।
তিলে তিলে ক্ষয়ে যাচ্ছে একটি জীবন,
তার একমাত্র অবলম্বন।
মেয়েটির রাতে ঘুম হয় না, চুল ঝরে যাচ্ছে বড্ড অবেলায়।
অকালে হাড়ক্ষয় রোগের ধারক হয়েও,
নিজ শারীরিক অবস্থার দিকে তাকানোর সময় তো নেই।
বাঁচাতে হবে তাকে, যার জন্য তার নিশ্বাস নেয়া।
মাঝরাতে গুনতে থাকে পাশেই শুয়েই থাকা
অবলম্বনের বুকের স্পন্দন!
উঠছে? নামছে! আহ! বেঁচে আছে!
মুখের গোঁজা ওড়নায় বুকফাটা আর্তনাদ
চাপা রয় অতি সন্তর্পনে, প্রতি রাতেই।

ওদিকে কাজ চাই! মনের মত কাজ।
প্রলোভন প্রচুর, কিন্তু সে জগতে প্রবেশ করলে
ফেরা যায় না... ফিরে এলেও বড্ড ব্যর্থতার গন্ধ!
বিধি-নিষেধ জারি করে রাখা সৃষ্টিকর্তার চোখে
কোনটি বেশি মূল্য রাখে- তার দেয়া উপহারের সঠিক ব্যবহার,
নাকি অদৃশ্য আঙ্গুরের শরবতের নেশা?
এটি বুঝতেই মেয়েটির অর্ধেক জীবন হয়ে গেছে পার, 
বাকিটায় ধাক্কা এলো এক বিশাল যে-
হাতে সময় বেশি নেই! 
অপশন? সেও তো একটাই!
হয় মরো, নয়তো মরো’ই!!

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত