বেড়েছে মাছ, ভোজ্য তেল ও মুরগির দাম

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০২২, ১৪:৪০

অনলাইন ডেস্ক

এ সপ্তাহের বাজারে দাম বেড়েছে মাছ, ভোজ্য তেল ও মুরগির। দাম কমেছে পেঁয়াজ ও রসুনের। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে সবজি ও ডিমের দাম। এদিকে নিত্যপণ্যের দাম অস্থিতিশীল থাকায় ক্রেতাদের মুখে দেখা গেছে চিন্তার ছাপ। পণ্যের বাড়তি দাম হওয়ায় বিক্রেতারাও পাচ্ছেন না ক্রেতা। শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল বাজার সরেজমিন প্রত্যক্ষ করলে এসব চিত্র উঠে আসে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেড় থেকে ২ কেজি ওজনের কাতল ৩০০-৩৫০ টাকা, ২ থেকে ৪ কেজি ওজনের কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার টাকা, বড় সাইজের বোয়াল ৭০০ টাকা, ছোট সাইজের বোয়াল ৫০০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, ৩ কেজি ওজনের দেশি রুই ৫৫০ টাকা, ছোট রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, গ্রাস কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ১৮০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাইকা মাছের কেজি ৫০০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, বাছ মাছ ৬০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, ট্যাংরা ৬০০ টাকা, চিতল ৬০০ টাকা, কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা, দেশি শিং এক হাজার টাকা, শোল ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৬৫০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা ও টাকি মাছ ৪৫০ টাকা।

বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দামটাও একটু বেশি বলে জানিয়েছেন কাওরান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. জলিল। তিনি বলেন, ‘আগের সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের বাজার কিছুটা চড়া রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি বাজারের ১২-১৫টি মাছের ট্রাক আসত। আজ এসেছে মাত্র ৫টি।’ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় মাঝারি দামে আগের মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। এসব বাজারে শসা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০, করলা ৬০, চাল কুমড়া পিস ৪০, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০, চিচিঙ্গা ৪০, পটল ৪০, ঢেঁড়স ৫০, কচুর লতি ৬০, পেঁপের কেজি ৪০, বটবটির কেজি ৫০ ও ধুন্দুলের কেজি ৪০ টাকা।
সরবরাহ ভালো থাকায় বাজারে সবজির দাম কম বলে জানান কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা সজিব। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সবজি আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। সরবরাহ ঠিক থাকায় সবজির দাম বাড়েনি।’ এসব বাজারে কাঁচামরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা। শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে, কেজি ৪০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩০০ টাকা কেজি। বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। পেঁয়াজের দাম কমেছে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। আর একটু ভাল মানের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। বাজারে রসুনের দাম কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কমেছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বাজারে চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে কেজি ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা।

হাতিরপুল বাজারের পেঁয়াজ-রসুন বিক্রেতা মো. সাইফুল বলেন, ‘বাজারে পেঁয়াজ রসুনের আমদানি ভালো থাকায় ক্রেতাদের চাহিদাও কম। একারণেই দাম কমেছে।’ মুদি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। এছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এসব বাজারে দেশি মুশুরের ডালের কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মুশুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। প্যাকেট আটার কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। এছাড়াও বাজারে বাড়ছে ভোজ্য তেলের দাম। লিটারপ্রতি তেলের দাম ৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ১৯৮ টাকা প্রতি লিটার তেল বিক্রি হয়েছে।

মুদি দোকানি মো. সুফিয়ান বলেন, ‘বাজারে বাড়তি দামে তেল বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি লিটার তেল বিক্রি করছি পাইকারি ২০৩ টাকা ও খুচরা ২০৫ টাকা।’ এদিকে আগের মতোই রয়েছে ডিমের দাম। বাজারে আজ হাঁসের ডিম ১৬০-১৮০ টাকা, মুরগির ডিম ১১০-১২০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগীর ডিম ১৮০ টাকা, ফার্মের মুরগির সাদা ডিম ১১০ টাকা ডজনে বিক্রি হচ্ছে। মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও এই দামে বিক্রি হয়েছিল। অন্যদিকে দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, পাকিস্তানি ২৮০ টাকা, ব্রয়লার ১৪৫ টাকা, লেয়ার (লাল) ২৫০ টাকা এবং লেয়ার (সাদা) দাম ২২০ টাকা।

গরুর মাংস ব্যবসায়ী সলিম মিয়া বলেন, ‘মাংসের বাজারে সব আমরাই। কোনো ক্রেতা নেই। আগে যখন ৫৮০ টাকা কেজি মাংসের দাম ছিল, তখন জমজমাট ব্যবসা ছিল। আমি ৩৭ বছর ধরে এই ব্যবসা করি। ৩০ টাকা কেজিও গরুর মাংস বিক্রি করেছি। সেখান থেকে আজ গরুর মাংস কেজি ৭০০ টাকা। এত দাম হলে মালিকেরাও লাভবান হন না। কারণ, এখন তো বিক্রিই নেই।’ মুরগী ব্যবসায়ী জয়নাল বলেন, ‘মুরগির বাজার গত সপ্তাহের মতো কমই আছে। তবে আগামী সপ্তাহে দাম বাড়তে পারে।’

সাহস২৪.কম/এআর/এসটি/এসকে.