‘ঘুম থেকে উঠে দেখি বন্যায় সব বই ভেসে গেছে’

প্রকাশ | ২৪ আগস্ট ২০১৭, ১৩:২০

আসাদুজ্জামান সাজু

ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার সব বই বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এখন শুধু খাতা আর কলম নিয়ে স্কুলে যাচ্ছি। যে টুকু সময় পাই, বান্ধবীদের বই নিয়ে স্কুলেই একটু পড়ি। কয়েক দিন পর পরীক্ষা শুরু হবে। কি হবে আমার?

কথাগুলো বললেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী ছবুরা খাতুন। এ অবস্থা শুধু ছবুরা খাতুনের নয়, তার মত ওই বিদ্যালয়ের অন্তত ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রীর বই-খাতা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।

ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী আফরোজা খাতুন জানান, ১৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টায় হাতীবান্ধা উপজেলার তালেব মোড় এলাকায় আমরা ৫/৬ জন বন্ধু এক সঙ্গে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে ছিলাম। সকাল ৯টায় বাড়ি এসে দেখি ঘরের সব বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। অনেকের বাড়ি পানির স্রোতে ভেঙ্গেও গেছে। আমরা বই-খাতা কিছুই রক্ষা করতে পারি নাই।

৫ম শ্রেণির অপর ছাত্র মতিয়ার রহমান জানান, বন্যার পানিতে আমাদের বই ভেসে গেছে। আমরা পড়াশুনা করতে পারছি না। কয়েক দিন পর পরীক্ষা শুরু হবে। পড়াশুনা করতে না পারলে পরীক্ষায় লেখবো কি? 

হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী গ্রামের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী সুফিয়া আক্তার বলেন, সন্ধ্যায় বাড়িতে তিস্তার পানি উঠায় পাশে নানার বাড়িতে বাবা আমাকে রেখে আসে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সব বই পানিতে ভেসে গেছে।

গড্ডিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোকসান আক্তার বলেন, আমার বিদ্যালয়ের বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীর বই বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ফলে তাদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। এখনো তালিকা তৈরী করা হয়নি, তালিকা তৈরী করে তাদের বইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। 

লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার জানান, বন্যায় বেশ কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বই পানিতে ভেসে গেছে। আমরা তাদের তালিকা তৈরী করে সরকারি গুদাম থেকে বই সরবরাহ করতে চেষ্টা করছি।