অল্প বৃষ্টিতে উদ্বিগ্ন ঠাকুরগাঁওয়ের পাট ও আমন চাষিরা

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২২, ১৫:৩৭

সাহস ডেস্ক

ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টির অভাবে খরার মতো পরিস্থিতির কারণে সময়মতো পাট কাটা ও আমন চাষ ব্যাহত হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন জেলার আমন ও পাট চাষিরা। উর্বর মাটির কারণে এ জেলায় ধান, পাট, ভুট্টা, গম ও আখের প্রচুর চাষ হয়। কিন্তু এ বছর বর্ষাকালেও বৃষ্টি না হওয়ায় প্রাকৃতিক আঁশ পচানো ও প্রক্রিয়াজাত করতে সমস্যায় পড়েছেন পাট চাষিরা। পর্যাপ্ত পানি না থাকায় জাগ দিতে না পারায় পাট চাষিরা তাদের পাট কাটাচ্ছেন না। প্রতি বছর এই মৌসুমে তারা পাট কাটান এবং পচানোর জন্য পানির নিচে রাখেন বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। তারা জানান, এখন পাট না কাটা হলে আমন চাষিরা একই জমিতে সময় মতো আমন ধান চাষ করতে পারবে না। এতে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।

জেলার আমন চাষিরা অনেকাংশেই বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ আমনের জমিতে সেচের ব্যবস্থা নেই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মোট ১ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে যা গত বছর ছিল ১ হাজার ২২২ হেক্টর। সাধারণত কৃষকেরা ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই আমন ধান চাষ করলেও এ বছর জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারেননি।

সদর উপজেলার কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, জুন মাসে বৃষ্টি হয়েছে। আমন চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি কিন্তু এখন বৃষ্টির কোনো লক্ষণ নেই। রহমত নামে এক পাট চাষি বলেন, সব খাল-বিল শুকিয়ে গেছে এবং পাট পচানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় পাট কাটাতে ব্যর্থ হয়েছি। সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় জানান, প্রতি বছর জুলাই মাসে জেলায় ৭০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড থাকলেও এ বছর আবহাওয়া অফিস এখন পর্যন্ত মাত্র ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। মাত্র ১০ শতাংশ জমি আমন চাষের আওতায় আনা হয়েছে এবং খরার মতো পরিস্থিতি চলতে থাকলে কৃষকদের লোকসান গুণতে হবে বলে জানান তিনি।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, এই পরিস্থিতির কারণে আমরা বিএডিসি ও বিএমডিএ কর্তৃপক্ষকে তাদের সেচ পাম্পগুলো চালু রাখার জন্য বলেছি। এছাড়া আমন চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে রবিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বুলেটিনে জানিয়েছে, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগ এবং টাঙ্গাইল, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত