বন্যায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, ঝুঁকিতে সিলেটের ভাসমানরা

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২২, ১৮:৪৭

সাহস ডেস্ক

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়ার পাশাপাশি চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন সিলেটবাসী। রোগ আতঙ্কজনক পর্যায়ে না পৌঁছালেও সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ওই এলাকায় বসবাসরত বিশাল সংখ্যক ভাসমান মানুষ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, সিলেটে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগী বাড়ছে। তবে আতঙ্কজনক পর্যায়ে নয়। গ্রামীণ জনপদ নিয়ে আমরা খুব একটা চিন্তিত নই। তবে সিটি করপোরেশন নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। “নগরীর যেসব এলাকা পানিতে তলিয়েছে এর একটা বিশাল জনগোষ্ঠী বস্তিবাসী। এই নিম্ন আয়ের মানুষই বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে,” বলেন তিনি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, নগরীর প্রধান সমস্যা হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি। বস্তি এলাকার মানুষগুলো বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। জানা যায়, ১৭ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত ডায়রিয়ার রোগী ছিলেন ১১৪ জন। কিন্তু পরবর্তী ৩ দিনে তা ৫৫০ জনে পৌঁছায়। প্রতিনিয়তই পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও এসব রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জেলায় ১৪০টি এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে তিনটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে সর্বোচ্চ ১৬টি করে মেডিকেল টিম রয়েছে। এছাড়া কানাইঘাটে ১২, জৈন্তাপুরে ১১, বিশ্বনাথে ১১, গোয়াইনঘাটে ১০, জকিগঞ্জে ১০, সদরে ১০, ফেঞ্চুগঞ্জে ১০, ওসমানীনগরে ৯, দক্ষিণ সুরমায় ৮, বালাগঞ্জে ৭ ও  কোম্পানীগঞ্জে ৭টি টিম কাজ করছে। এর বাইরে জেলা শহরের জন্য তিনটি টিম রাখা হয়েছে।

বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডায়রিয়ার পাশাপাশি চর্মরোগ নিয়ে অনেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ডায়রিয়া ছাড়া অন্যান্য রোগের রিপোর্টিং এখনো পুরোপুরিভাবে নিচ্ছেনা হাসপাতালগুলো। বর্তমানে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রিপোর্টিং করা হচ্ছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তিনটি মেডিকেল টিম বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এছাড়াও ওয়ার্ড ভিত্তিক স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন চালু হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনব্যাপী ওয়ার্ড ভিত্তিক এই স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন চলবে। এছাড় বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করার জন্য নগরীতে এক লাখ ৬০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের উদ্যোগে চারটি ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে একটি, মোট পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ পানি বিশুদ্ধকরণ মেশিন বর্তমানে কাজ করছে। ইতোমধ্যে নগরীতে দুটি মেশিন বিশুদ্ধ পানি দিতে কাজ করছে। একটি মেশিন ঘণ্টায় ৫০০ লিটার পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারে। আর একটি মেশিন সুনামগঞ্জে রাখা হয়েছে। অপর দুটি মেশিন সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলা এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কাজ করছে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসটি/এসকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত