ওমিক্রনের নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট, বেশি সংক্রমণের আশঙ্কা

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২২, ২০:০০

সাহস ডেস্ক

দেশে দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের নতুন সাবভ্যারিয়েন্ট বিএ.৪/৫ (BA.4/5) শনাক্ত করা হয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে একদল গবেষকের পরিক্ষায় এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) যশোরের দুজন আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সংগৃহীত ভাইরাসের আংশিক (স্পাইক প্রোটিন) জিনোম সিকুয়েন্সের মাধ্যমে করোনার নতুন এই উপধরনটি শনাক্ত করা হয়।

করোনার এই নতুন সাবভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সাবভ্যারিয়েন্টটি মানুষের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ জন্য মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই।

তিনি জানান, অচিরেই পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স করে এ বিষয়ে আরও তথ্য জানা সম্ভব হবে এবং এই সাবভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের কাজ জিনোম সেন্টারে অব্যাহত থাকবে। এর আগে জিনোম সেন্টারে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের স্থানীয় সংক্রমণও শনাক্ত করা হয়েছিল। গবেষক দলটি জানায়, আক্রান্ত দুজন ব্যক্তিই পুরুষ। যাদের একজনের বয়স ৪৪ এবং আরেকজনের বয়স ৭৯ বছর। আক্রান্ত ব্যক্তির একজন করোনা ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ এবং অপরজন দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং আরেকজন বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের শরীরে জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তারা উভয়েই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বলে গবেষকরা ধারণা করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে করোনার নতুন এই সাবভ্যারিয়েন্ট শনাক্তে গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন- বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাসান মো. আল-ইমরান, পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানভীর ইসলাম, ড. সেলিনা আক্তার, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, শোভন লাল সরকার, এ এস এম রুবাইয়াতুল আলম, মো. সাজিদ হাসান, জিনোম সেন্টারের গবেষণা সহকারী প্রশান্ত কুমার দাস, রাসেল পারভেজ প্রমুখ।

দলটি জানায়, মূল ধরনের মতোই মিউটেশন দেখা যায় বিএ.৪/৫ উপধরনটির স্পাইক প্রোটিনে। তবে এর সাথে এই উপধরনটির ডেল্টা ধরনের মতো স্পাইক প্রোটিনের ৪৫২ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডে মিউটেশন থাকে। এ ছাড়া এই সাবভ্যারিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ৪৮৬ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডেও মিউটেশন দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে এই দুটি সাবভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে। গত মে মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ ভারতে। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউ এবং সম্প্রতি ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য এই উপধরনটি দায়ী বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। জানা যায়, ভ্যাকসিন নেওয়ারাও এই সাবভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন। আগামী দিনে এই উপধরনটি অন্যান্য উপধরনের তুলনায় বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

সাহস২৪.কম/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত