বিশ্ব থাইরয়েড দিবস আজ

দেশে থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ০৯:৪০

স্বাস্থ্য ডেস্ক
ফাইল ফটো

আজ ২৫ মে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস। ২০০৯ সাল থেকে সারাবিশ্বে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। বর্তমানে বিপুল জনগোষ্ঠী বিভিন্ন ধরণের থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত। দেশে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের বিভিন্ন থাইরয়েড সমস্যা রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ (এসিইডিবি)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০% এর কাছাকাছি  জনগোষ্ঠী থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত। এদের অর্ধেকের বেশীই জানে না যে তারা থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে। প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলাদের প্রায় ২ শতাংশ এবং পুরুষদের প্রায় ০.২ শতাংশ হাইপারথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের বৃদ্ধি জনিত সমস্যা) রোগে ভুগে। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ, মহিলাদের মধ্যে ৩.৯ শতাংশ থেকে ৯.৪ শতাংশ হারে হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি জনিত সমস্যা) থাকতে পারে।

আরও প্রায় ৭ শতাংশ মহিলা ও পুরুষ সাবক্লিনিক্যাল হাইপোথাইরয়েডিজমে ভুগে থাকে। নবজাতক শিশুদেরও থাইরয়েডের হরমোন ঘাটতি জনিত সমস্যা হতে পারে এবং তার হার ১০ হাজার জীবিত নবজাতকের জন্য ২-৮ হতে পারে। বাড়ন্ত শিশুরাও থাইরয়েড হরমোন ঘাটতিতে ভুগতে পারে। এ সময় থাইরয়েডের হরমোন ঘাটতি হলে শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। 

থাইরয়েড একটি গ্রন্থি যা আমাদের গলার শ্বাসনালীর সামনের দিকে থাকে। গ্রন্থিটি দেখতে প্রজাপতি সাদৃশ এবং এটি ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালিকে প্যাঁচিয়ে থাকে। যদিও এটি একটি ছোট গ্রন্থি, কিন্তু এর কার্যকরীতা ব্যাপক। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিসৃত হরমোন আমাদের পক্ষে খুব উপকারী। এই হরমোন মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। ভ্রুণ অবস্থা থেকে আমৃত্যু থাইরয়েড হরমোনের প্রয়োজন অপরিহার্য। থাইরয়েড গ্রন্থি কর্তৃক নিঃসৃত হরমোন মানব পরিপাক প্রক্রিয়ায় অন্যতম ভূমিকা পালন করে।

এ হরমোনের তারতম্যের জন্য শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, শরীর মোটা হওয়- ক্ষয় হওয়া, মাসিকের বিভিন্ন সমস্যা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হার্টের সমস্যা এবং চোখ ভয়ঙ্করভাবে বড় হয়ে যেতে পারে। বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ হিসেবে থাইরয়েড হরমোনের তারতম্যকে দায়ী করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দেশে থাইরয়েড চিকিৎসার তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, সরকার পুরনো ৮টি মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে নতুন করে আরো ছয়টি মেডিক্যাল কলেজে অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ খোলার মাধ্যমে হরমোনজনিত রোগের চিকিৎসার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে প্রায় ১০০ হরমোন বিশেষজ্ঞ কাজ করে যাচ্ছেন। আর বেসরকারি পর্যায়ে ২০০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাজ করছেন।

আয়োডিন শরীরে অতি প্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশে যদিও আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া হচ্ছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের বেশির ভাগ স্কুলগামী শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের আয়োডিনের অভাব রয়েছে। 

 

থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ কমে যাওয়ার কারন 
- খাদ্যে আয়োডিনের অভাব
- কিছু অটো ইমিউন ডিস-অর্ডার
- কোনো কারনে থাইরয়েড অপারেশন হলে
- রেডিওথেরাপি নিলে
- এছাড়া কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।
- জন্মের সময়ে থাইরয়েড গ্রন্থি তৈরি না হলে
- কিছুখাদ্য উপাদান বেশি পরিমাণে খেলে যেমন-বাধাকপি, ব্রকলি, পুইশাক, মিষ্টি আলু, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।


থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যাবার কারন 
- অটো ইমিউন ডিস অর্ডার
- থাইরয়েড হরমোন বেশি পরিমাণে হলে
- থাইরয়েড গ্রন্থিতে কোনো সংক্রমন হলে
- থাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমার হলে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত