আজ পহেলা বৈশাখ, শুভ নববর্ষ

প্রকাশ | ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৫৮ | আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:০৪

অনলাইন ডেস্ক

আজ রবিবার, পহেলা বৈশাখ, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। আজ থেকে আরেকটি নতুন বছরের পরিক্রমা শুরু হলো বাঙালির নিজস্ব বর্ষপঞ্জিতে। বাংলাভাষীর জীবনে এলো এক অমলিন আনন্দের দিন। বাঙালি আজ সকালে জেগে উঠেছে নতুন সূর্যের আলোয়; আজ সবাই দিনভর মেতে রইবে নাচে-গানে, উৎসবে-আমোদে। 

পহেলা বৈশাখ জাতির এক অনুপ্রেরণার দিন। আজ সর্বস্তরের মানুষ হৃদয়ের টানে, বাঙালিয়ানার টানে মিলিত হবে এ উৎসবে। তাতে থাকবে না কোনো ধনী-গরিবের বৈষম্য। উৎসবে শামিল হয়ে বাঙালি তার আপন ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক নিজস্বতা ও গৌরবময় জাতিসত্তার পরিচয়ে আলোকিত হবে।

পহেলা বৈশাখে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের নানা বয়সের মানুষ উৎসবের আলোয় রঙিন হয়ে উঠবে। পোশাক-পরিচ্ছদ, খানাপিনা, গানবাদ্যসহ সব কিছুতে থাকবে বাঙালিয়ানার প্রাধান্য। দিনভর ঘোরাঘুরি, আড্ডা, আমন্ত্রণ ও তুমুল উচ্ছ্বাসে মেতে উঠবে জাতি। যান্ত্রিক শহর ঢাকার মানুষ সাতসকালেই বের হবে ঘর থেকে। নারীরা পরবে লাল-সাদা শাড়ি, ছেলেদের পরনে থাকবে রংবেরঙের পাঞ্জাবি, ফতুয়াসহ বৈশাখের সাজসজ্জা। মা-বাবার সঙ্গে বেরিয়ে পরবে শিশু-কিশোরের দল। রাজধানীতে আজ বসবে নানা সাংস্কৃতিক উৎসব। মানুষ দল বেঁধে তাতে অংশ নেবে। 

রাজধানীতে প্রতিবছর ছায়ানটের প্রভাতী অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন। সামাজিক সকল অনাচারের বিরুদ্ধে মানুষের মনে শুভবোধ জাগিয়ে তোলার মানসে ১৪২৬ বঙ্গাব্দকে গানে গানে বরণ করে ছায়ানট।

‘অনাচারের বিরুদ্ধে জাগ্রত হোক শুভবোধ’ এই আহ্বান নিয়ে সাজানো হয়েছে রমনার বটমূলের আজকের প্রভাতী আয়োজন। তবে যথারীতি, পহেলা বৈশাখ ভোর সোয়া ছয়টায় বছরের প্রথম সূর্যোদয়কে স্বাগত জানানো হয় রাগালাপ দিয়ে। প্রত্যূষে শিল্পীরা গাইছে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা ও সৃষ্টির মাহাত্ম্য নিয়ে ভোরের সুরে বাঁধা গানের গুচ্ছ। এরপরেই গেয়েছে অনাচারকে প্রতিহত করা এবং অশুভকে জয় করার জাগরণী সুরবাণী। গান-পাঠ-আবৃত্তিতে দেশ-মানুষ-মনুষ্যত্বকে ভালবাসবার প্রত্যয় দীপ্ত উচ্চারণ রয়েছে তাতে।

শিক্ষার্থী-প্রাক্তনী-শিক্ষক নিয়ে, ছোট বড় মিলিয়ে এবারের অনুষ্ঠানে সম্মেলক গান পরিবেশন করছে শ’খানেক শিল্পী। অনুষ্ঠানে শিল্পীরা পরিবেশন করেন ১৩টি একক ও ১৩টি সম্মেলক গান এবং ২টি আবৃত্তি। ছায়ানটের আহ্বান অনুযায়ী রবীন্দ্র রচনা থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে আবৃত্তি দুটি। একই ধারায় গানগুলি নির্বাচন করা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, অতুলপ্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন, লালন শাহ্, মুকুন্দ দাস, অজয় ভট্টাচার্য, শাহ্ আবদুল করিম, কুটি মনসুর, সলিল চৌধুরী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা থেকে। জাতীয়সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হবে।