ইতিহাসের পাতা
'ইউ হাভ ব্রুটালি কিলড শেখ মুজিব?'
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০১৯, ১৩:১৬
এম আর আক্তার মুকুল ১৫ আগষ্টের বিকেলবেলা লন্ডনের বাস টার্মিনালে যান। খালি বাসের দোতলায় উঠে বিড়ি ধরিয়ে বসেন, ওনার মন খারাপ আজ। কিছুক্ষনপর জ্যামাইকান- বৃটিশ এক ভদ্রলোক তার পাশে এসে বসেন। তার হাতেও সিগারেট। দোতলায় অন্যকোন যাত্রী নেই।
জ্যামাইকান: বেয়াদবী মাফ করবেন। আমি কালো হলেও এদেশেই আমার জন্ম। আমি বৃটিশ নাগরিক। আপনি?
মুকুল: অনুমান করুন আমি কোন দেশের হতে পারি?
জ্যামাইকান: আপনি নিশ্চই ঘানা থেকে এসেছেন?
মুকুলঃ: না, আবার চেষ্টা করুন।
জ্যামাইকান: (বিকট শব্দে হেসে) আমি একটা আহাম্মক নাকি? আপনিতো ইজিপসিয়ান।
মুকুল: এবারো হল না। আবার চেষ্টা করুন। আমার দেশ আরো পূর্বে।
জ্যামাইকান: আমি একটা আস্ত গর্ধব। আপনি গান্ধীর দেশের লোক। ইন্ডিয়ান।
মুকুল: আপনি আবারো ভুল করেছেন। আমি ইন্ডিয়ান নই। তবে ইন্ডিয়া আমার প্রতিবেশী।
জ্যামাইকান: সরি আমি পারলাম না বলতে। তাহলে এবার আপনি আপনার পরিচয় দিন।
মুকুল: এতবার চেষ্টা করেও পারলেন না? আমি হচ্ছি বাংলাদেশের লোক। বাঙালী।
এম আর আক্তার মুকুলের জবাব দেয়ার সাথে সাথেই বাসের মধ্যে ঘটে এক অকল্পনীয় ব্যাপার যা বৃটিশ চরিত্রের বিপরীত। মুহুর্তে জ্যামাইকান ভদ্রলোকের চেহারা বদলে গেল, তার মুখের হাসি কর্পূরের মত উবে গেল। তিনি রাগে তখন ফেটে পড়ছেন।
মুকুলের পাশের সিট থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন। চিৎকার করে উঠলেন, " ইউ আর ফ্রম বাংলাদেশ? ইউ হাভ ব্রুটালি কিলড শেখ মুজিব? আই হেইট টু টক উইথ ইউ। থুঃ থুঃ!"
*
ঢাকার পত্রিকা বিলিকরা ছেলেটি কাঁদছে একা একা, পত্রিকাগুলো সামনে, ১৬ আগষ্টের সকাল। জল গড়িয়ে পড়ছে তার বুকের জামায়। এক ভারতীয় সাংবাদিক তাকে স্মরন করিয়ে দিলেন,
" তুমিতো মুজিবের অনেক সমালোচনা করতে"!
ছেলেটি কেঁদে কেঁদেই উত্তর দিল, " ভালো বা মন্দ যাই হোক, তিনিইতো ছিলেন আমাদের একমাত্র নেতা; তার নিন্দা করতাম কারন দোষারোপ করার মত আর কেউ আমাদের নেই"!
আহারে!
গ্রন্থ সহায়তা: মুজিবের রক্ত লাল- এম আর আক্তার মুকুল [ঈষৎ ছোট করে লিখেছি]
হু কিলড মুজিব- এ এল খতিব।