কুষ্টিয়ায় ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২২, ১৬:২২

সাহস ডেস্ক

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসব মুখর পরিবেশে সোমবার (৩১ অক্টোবর) দিনব্যাপী গ্রাম বাংলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বরইচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে।

প্রথমে ঢাক-ঢোল, কাঁশিসহ অন্যান্য বাদ্য যন্ত্র বাজতে থাকে। এর পর বাদ্যের তালে তালে লাঠিয়ালরা বাঁশের লাঠি ঘুরাতে ঘুরাতে মাঠে প্রবেশ করেন। শক্ত হাতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে ভেলকি ও কেরামতি দেখাতে থাকেন। এসব দেখে মুগ্ধ  নানা বয়সী শতশত দর্শক। লাঠিয়ালদের উৎসাহ দিতে তারা দুহাতে তালি দিচ্ছেন।

৩১ অক্টোরব ইউনিয়নের বিল বরইচারা যুদ্ধ দিবস উদযাপন উপলক্ষে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী এ লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বিল বরইচারা স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে পতাকা উত্তোলন, দোয়া, স্মৃতিচারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল।

বিল বরইচারা অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাবের সভাপতত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধকালীন জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম আবুল মনসুর মজনু, যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজানসহ আরও অনেকে।

যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক সহযোগীতায় বরইচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে চারটি দলের প্রায় ৬৫ জন দুই লাঠি, চার লাঠি, শর্কি খেলা, তলোয়ার ও ছুরিসহ নানা খেলা প্রদর্শন করেন। লাঠি খেলায় একদল শিশুও তাদের নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন।

ষাটোর্ধ আবুল কাশেম বলেন, এখন নিত্য নতুন খেলা আবিষ্কার হয়েছে। লাঠি খেলা খুব একটা চোখে পড়ে না। ঢোলের বারি (শব্দ) শুনে চলে আইছি (এসেছি)। অনেক দিন পর খেলা দেখে শৈশবে ফিরে গিছি (গিয়েছি)। খুব ভাল লাগছে।

লাঠিয়াল সরদার শহিদ শেখ বলেন, দিন দিন হারাতে বসেছে লাঠিখেলাসহ অন্যান্য গ্রামগঞ্জের খেলা। নতুন কেউ এসব খেলায় আসতে চায়না। ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমার নাতনী শারমিনকে লাঠিখেলা শেখাচ্ছি।

যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, যুদ্ধ দিবস উপলক্ষে ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে চারটি দলের ৬৫ জন অংশ নেন। খেলা দেখে সবাই খুশি।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ৩১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বিল বরইচারা নামের স্থানে পাকবাহিনী, আলবদর ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুল ইসলাম বদরের নেতৃত্বে ১৩ জন বীরমুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেছিলেন।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত