আমাদের ডেইরি শিল্পের সম্ভাবনা

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৫:১০

এস এম মুকুল
স্থানীয়ভাবে ছোট বড় ডেইরি ফার্ম গড়ে উঠলে গ্রামীণ উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। গাভী পালনের ফলে দেশে গরু উৎপাদন বাড়বে, মাংসের চাহিদা পুরণ হবে।

দুগ্ধশিল্প বাংলাদেশের একটি ক্রমবধর্মান শিল্প। দেশে তরল দুধের চাহিদা প্রায় পুরোটাই মেটায় দেশীয় খামারি ও দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানিগুলো। এ খাতে গড়ে উঠেছে প্রায় ৮টি বড় কোম্পানি। অতীতে এদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রামীণ জনগোষ্ঠী গতানুগতিক পদ্ধতিতে দুগ্ধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও বতর্মানে তা বাণিজ্যিক আকার ধারণ করেছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানুষের প্রতিদিন ২৫০ মিলি লিটার দুধ পান করা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের দুধ পানের পরিমাণ মাত্র ৪০ মিলিলিটার। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, দেশে দুধের চাহিদা প্রায় দেড় কোটি টন। অপরপক্ষে বছরে দুধ উৎপাদন হয় প্রায় ৯৩ লাখ টন।  

চাহিদার অনুপাতে ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৬০ লাখ টন। উৎপাদনের রেকর্ড উপাত্ত অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে- ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৩ লাখ টন। ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ লাখ ৭০ হাজার টন। 

২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯২ লাখ ৮৩ হাজার টনে। দেশে ২০০৬-০৭ অর্থবছরে গুঁড়ো দুধ আমদানির পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার টন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৩০ হাজার টনে। বিক্রীত পণ্যের ৯০ শতাংশই বিক্রি হচ্ছে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে। বাজারে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুধ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ শতাংশ। 

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা অনুযায়ী, এক থেকে তিনটি গরুর মালিক এমন পরিবারগুলোর কাছেই রয়েছে দেশের ৯০ শতাংশ গরু। ১০টি গরুর মালিকানা রয়েছে, এমন পরিবারগুলোর কাছে আছে মাত্র ৪ শতাংশ গরু।

সুযোগ অবারিত, সম্ভাবনা অনেক
আশার খবরটি হলো- শিল্পে এখন শিক্ষিত খামারিরা যুক্ত হচ্ছে। তাই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করলে দেশে যেমন দুধের ঘাটতি পূরণ হবে অপরদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আশার খবর হচ্ছে দেশে কয়েক বছর ধরেই দুধ উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু উৎপাদন বাড়লেও তা চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয়। তাই দুধ উৎপাদন চাহিদা অনুসারে না হওয়ার কারণে আমদানিও বাড়ছে। 

গুঁড়ো দুধ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিনিয়ত অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকতে হচ্ছে দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ‘লাইভস্টক ইকোনমি’ এর তথ্য অনুযায়ী, বতর্মানে দেশে দুধের মোট উৎপাদন ৯২ লাখ মেট্রিক টন, যা দেশের মোট চাহিদার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পূরণ করে। তবে দুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত খামারিদের একটি বড় অংশ নারী। এমন প্রেক্ষিতে আশাকরা হচ্ছে-  সরকারের প্রণোদনা পেলে দুগ্ধ উৎপাদনের বৃদ্ধির এই ধারা দ্রুত বিকাশের পাশাপাশি দেশের সম্পূর্ণ চাহিদা মিটাতে সক্ষম হবে। 

সাশ্রয় হবে গুড়ো দুধ আমদানির হাজার কোটি টাকা। অনেকের ধারণা যে টাকা গুড়ো দুধ আমদানিতে ব্যয় হয় অথবা সরকার আমদানি শুল্ক ছাড় দেয় তা যদি এই দুগ্ধ শিল্প বিকাশে প্রণোদনা বা ঋণ সহায়তা দেয়া হয় তাহলে দেশে দুধের ঘাটতি তো থাকবেই না বরং রপ্তানি করা সম্ভব হবে। 

আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখা দরকার- আমাদের ডেইরি শিল্প শুধুমাত্র দুগ্ধ উৎপাদনেই সীমিত নয়। এরসাথে ব্যাপক ও বহুমুখি কর্মসংস্থান ও শিল্প সম্ভাবনা জড়িত। যেমন-  দেশব্যাপী ডেইরি ফার্মের মাধ্যমে গাভী পালন হলে বেকার যুবক-যুবতীরা বিদেশগামী হবেনা বা চাকরির পেছনে ছুটবেনা। স্থানীয়ভাবে ছোট বড় ডেইরি ফার্ম গড়ে উঠলে গ্রামীণ উন্নয়ন দ্রুত ত্বরান্বিত হবে। গাভী পালনের ফলে দেশে গরু উৎপাদন বাড়বে, এতে দেশে মাংসের চাহিদা পুরণ হবে। 

বিকশিত হবে আমাদের চামড়া শিল্প। তরল দুধের পাশাপাশি গুড়ো দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ। আরো একটি বিরাট পরিবেশবান্ধব লাভ আছে। আর সেটি হলো- ডেইরি ফার্ম বিকশিত হলে প্রচুর গোবর উৎপাদনের মাধ্যমে দেশে প্রাকৃতিক সারের ব্যবহার কৃষিজ উৎপাদনে সামগ্রিকভাবে কল্যাণ বয়ে আনবে।

ভারতের শ্বেত বিপ্লব
আমরা জানি, ভারতের সাদা বিপ্লবের জনক বলে খ্যাত, দেশটির বিখ্যাত দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি আমুলে'র প্রতিষ্ঠাতা ভারগিস কুরিয়েন (মৃত্যু ৮ সেপ্টেম্বর ২০১২)। কুরিয়েনকে সারা বিশ্বেই দুগ্ধ শিল্পের বিকাশে অন্যতম পথিকৃত বলে মানা হয়। তার হাত ধরেই ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডেইরি ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম গড়ে ওঠে। তার ভাবনা এবং পরিশ্রমেই ভারতে দুগ্ধ শিল্পের নয়া বিকাশ ঘটে, যা ‘সাদা বিপ্লব' বলে পরিচিতি লাভ করে। 

এছাড়া কুরিয়েনের চেষ্টা এবং উদ্যোগেই ভারত বর্তমানে বিশ্বের সর্বাধিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। কুরিয়েন বিশ্বাস করতেন, উন্নয়নের সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে, উন্নয়নের হাতিয়ারকে মানুষের হাতে তুলে দেয়া। আর এ নীতিতেই তিনি দুধ আমদানিকারক দেশ থেকে ভারতকে পরিণত করেছেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ দুগ্ধসামগ্রী রপ্তাতানিকারক দেশে। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে সিনোভ্যাটের জরিপে ভারতের শীর্ষ ব্র্যান্ড হয় আমুল।

বিপ্লবের পথ দেখিয়েছে মিল্কভিটা
মিল্কভিটা ১৯৬০ এর দশকে ইষ্টার্ণ মিল্ক প্রডিউসার্স কো-অপারেটিভ ইউনিয়ন লিমিটেড নামে দুটি ছোট প্রতিষ্ঠানের একীভুত হওয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়। ফাও ও ড্যানিডার সহযোগিতায় বাংলাদেশ মিল্ক প্রডিউসার্স কো-অপারেটিভ লিমিটেড নামে ১৯৭৭ সালে নতুনভাবে গঠিত হয়। 

তারপর মিল্ক ভিটা ব্রান্ড নামে বাজারে আসে।  ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেড (মিল্কভিটা) বাঘাবাড়ী কারখানায় দেশের এক মাত্র বুল ষ্টেশন স্থাপন করা হয়। শুরু থেকেই মিল্কভিটা প্রথমে বিদেশ থেকে অনেক টাকা ব্যায়ে উন্নতজাতের সিমেন(বীজ) আমদানী করে দেশের গো-সমৃদ্ধ এলাকার গো-খামারীদের মধ্যে বিনামূল্যে সরবরাহ শুরু করে। মিল্কভিটার বাইরে বিভিন্ন বেসরকারী দুগ্ধ সংগ্রহ কেন্দ্রের মাধ্যমে দিনে অনেক দুধ সংগ্রহ করা হচ্ছে। 

সব মিলিয়ে উন্নতজাতের গাভী থেকে শাহজাদপুরসহ এর আশেপাশের এলাকায় (বাঘাবাড়ী মিল্কসেড এরিয়া) দিনে ৪ লক্ষাধিক লিটার দুধ উৎপাদিত হচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ দুধ উৎপাদনের একমাত্র অবদান মিল্কভিটা কর্তৃক বিনামূল্যে সরবরাহকৃত উন্নতজাতের সিমেন । 

জানা গেছে, ১২-১৪ বছর আগে অষ্ট্রেলিয়া থেকে সিমেনের ডোজপ্রতি ২৫০ টাকায় ক্রয় করে সমবায়ীদের মধ্যে বিনামূল্যে প্রদান করা হতো। বাংলাদেশের পশু সম্পদ উন্নয়ন ও সফল সমবায় হিসাবে মিল্কভিটার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। 

মিল্কভিটা প্রতিদিন ৪০,০০০ দুগ্ধ উৎপাদনকারী কৃষকের উৎপাদিত দুধ সংগ্রহ করে। এর অধীনে রয়েছে ৩৯০টি প্রাথমিক কো-অপারেটিভ সোসাইটি রয়েছে। প্রতিদিন সদস্যদের কাছে থেকে গড়ে ২/১ লিটার উদ্বৃত্ত দুধ সংগ্রহ করে। 

দুধের গ্রাম জিয়ালা নাম  
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জিয়ালা গ্রামে ১১৫টি পরিবারের বসবাস। এই জিয়ালা গ্রাম এখন পরিচিতি পেয়েছে ‘দুগ্ধগ্রাম’ নামে। গ্রামবাসী ‘জিয়ালা ঘোষপাড়া দুগ্ধ উৎপাদন সমবায় সমিতি’ ও ‘জিয়ালা ঘোষপাড়া পশু উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি’ নামে দু’টি সমিতিও করেছেন। এ থেকে যেমন সদস্যদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে, তেমনি গ্রামের রাস্তাঘাট নির্মাণ, দুস্ত পরিবারের মেয়েদের বিয়েতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজও করা হচ্ছে।

জিয়ালা গ্রামের অধিকাংশ পরিবার বংশপরম্পরায় পুরোনো পদ্ধতিতে দেশি গরু পালন ও দুধ বিক্রির পেশায় জড়িত। কিন্তু তাদের অভাব-অনটন যেত না। গ্রামের কালিপদ ঘোষের ছেলে প্রশান্ত ঘোষ ১৯৯৮ সালে শেষ দিকে সাভারে বেড়াতে যান। সেখানে গিয়ে বিদেশি জাতের গরু পালন ও দুধ উৎপাদনের আধুনিক খামারব্যবস্থা দেখে বাড়ি ফিরে লেগে পড়েন কাজে। এলাকার শিক্ষক অমল কৃষ্ণ ঘোষ, দিবস চন্দ্র ঘোষ ও নিমাই ঘোষকে নিয়ে শুরু করেন খামার গড়ার কাজ। প্রথম দিকে মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে প্রত্যেকে দু’টি করে বিদেশি জাতের গাভী কেনেন। 

খামারের সুবাদে গ্রামে এখন অসচ্ছল পরিবার নেই বললেই চলে। জিয়ালা গ্রামের প্রায় অর্ধেক লোকেরই পাকাবাড়ি হয়েছে গরুর বদৌলতে। একই হাওয়া লেগেছে প্রতিবেশী চন্ডীপুর গ্রামেও। জিয়ালার ১১৫টি ও চন্ডীপুরের ৩৬টি পরিবারের ৯৫ শতাংশ পরিবার গরু পালন ও দুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত।  

দুধ উৎপাদনে দেশে দ্বিতীয় স্থান 
 সাতক্ষীরা জেলা দুগ্ধখামার মালিক সমিতির সূত্রে জানাযায়, সাতক্ষীর  জেলা দুধ উৎপাদন করে বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। জেলা তথ্য সারণী থেকে জানাগেছে, এ জেলায়  প্রায় ৩ হাজার ৫০০টি খামার। জেলায়  প্রতিদিন প্রায় ১৬ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন হয়। দুধ উৎপাদনে দেশে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে সাতক্ষীরা।  জেলা  প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়,  জেলায় গরুর খামার রয়েছে ১ হাজার ৯৯১টি। তার মধ্যে রেজিস্টার্ড ফার্ম রয়েছে ৯৫১টি। জেলার তালা উপজেলায় রয়েছে ৩০০টি গরুর ফার্ম। এর মধ্যে শুধু জিয়ালা গ্রামে রয়েছে ১৩৭টি ফার্ম। 

জিয়ালা গ্রামকে এরই মধ্যে দুধের গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিন ৮ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। কলারোয়া উপজেলায় রয়েছে ১৫০টি গরুর ফার্ম। এখান থেকে প্রতিদিন ২২ হাজর ৪৩৫ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। আশাশুনি উপজেলায় খামার রয়েছে ৬০-৭০টি। এ উপজেলায় প্রতিদিন দুধ উৎপাদন হয় ১৩ হাজার লিটার। সূত্র মতে, আমাদের দেশি প্রজাতির গাভী বছরে দুধ দেয় ৩ হাজার লিটার। সেখানে একটি বিদেশি গাভী দুধ দেয় ১০ হাজার লিটার। আমাদের দেশে অস্ট্রেলিয়ান জার্সি, ন্যাড়ামুন্ডো, হরিয়ানা ও সিন্ধি জাতের গাভী বেশি পালন করা হয়। 

আমাদের দেশে যদি কানাডা, ইংল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকার মতো দেশ থেকে যদি উন্নত জাতের বীজ আনা যায় সে ক্ষেত্রে খামার মালিকরা আরও বেশি উপকৃত হবে। তখন আরও বেশি দুধ উৎপাদন করা যাবে। 

ডেইরি শিল্পের উন্নয়নে অন্তরায়সমূহ
দেশের দুগ্ধ শিল্পে বিকাশে পথে অন্তরায় সমূহের মধ্যে রয়েছে- দুগ্ধ শিল্পে মানসম্পন্ন দুগ্ধবতী গাভীর সংকট, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনবলের অভাব, দক্ষ প্রাণী চিকিৎসক ও ভেটেরিনারি চিকিৎসকের অভাব, স্বল্প সুদে ঋণ না পাওয়া, উৎপাদিত দুধের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া এবং দুধ সংরক্ষণ, বাজারজাতে সহযোগিতা না থাকা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক দুধ গ্রহণের তালিকায় গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে তলানিতে। 

দেশে মাথাপিছু দৈনিক দুধ গ্রহণের পরিমাণ মাত্র ১২৫ মিলিলিটার। আবার গাভী ও মহিষের দুধ উৎপাদনক্ষমতার দিক থেকেও বেশ পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার একটি গাভীর বার্ষিক দুধ উৎপাদন (ল্যাকটোজেন) ক্ষমতা ৪ হাজার ৯২৬ কেজি। সেখানে আমাদের দেশী গাভীগুলোর গড় বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা মাত্র ২০৭ কেজি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বছরে ৫২,০০০ কোটি টাকা বা ৫ বিলিওন ইউরো, আমেরিকা প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা বা ২.৩ বিলিওন ডলার, কানাডা প্রায় ৮০০ মিলিওন ডলার বা ৬,৫০০ কোটি টাকা ভারত ১.৫ বিলিওন ডলার বা ১২,৮০০ কোটি টাকা ডেইরিতে ভূর্তিকী দেয়। 

কাজেই ডেইরী শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশ  ভূর্তিকী প্রাপ্ত দেশ থেকে নিম্নমানের গুঁড়া দুধ কম শুল্কে আমদানী বন্ধ করতে হবে। তরল দুধ পান করার জন্য সরকারী পর্যায়ে প্রচারণা চালাতে হবে। পাউডার ও সয়াবিন এর গাদ দিয়ে তৈরি কন্ডেন্সড মিল্ক নিষিদ্ধ করা। 

পশু খাদ্যের মূল্য সহনীয় করতে পশু খাদ্যের মুল্য নিয়ন্ত্রন ও শুল্কমুক্ত আমদানীর উম্মুক্ত করা। ডেইরী খাতকে সকল ধরনের শুল্ক ও আয়করমুক্ত রাখতে হবে। প্রাণি সম্পদ অফিস সমূহে ডেইরী বা অন্যান্য পশু পালন ও প্রযুক্তির উপর ট্রেনিং এর ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্বল্প সুদে ডেইরিতে পর্যাপ্ত ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ। 

এস এম মুকুল, কলাম লেখক ও উন্নয়ন গবেবষক

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

লেখকদের নামঃ